পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আধ পয়সা ! অমনি মনটা ছাৎ করে উঠল। একটু ভেবে খাতাঞ্চি খরচের পাতায় জর টানলেন --সোনাতোনের হাওলাত বাবদ তাহার গতবৎসরের মাহিনা দেওয়া যায় আধ পয়সা । কিন্তু এতেও বাজে খরচ বন্ধ হওয়া দায়, এবার খাতাঞ্চিমশায় বেশ বুঝলেন। পাচদিন ধরে খাতাঞ্চিমশায়ের মেজাজ খিটখিটে হয়েই রইল । তিনি কেবলি বিড়-বিড় করতে লাগলেন –কুড়িতে বুড়ি, তা হলে রোস, তা হলে এই কুড়ি গণ্ডায় একপণ ; একপণ একপণ দুইপণ, আর তিনপণ, হলে হল পাচপণ ; পাচপণ আর তিনপণ হলে হল আটপণ, আটের উপর আর একপণ কিংবা আর এক মেয়ে হলে হল নপণ ; তা হলে হাতে রইল এই দুই চোখ ! খাতাঞ্চিমশায় চশমা জোড়া হাতে করে মেয়ের বাজে খরচ মনে-মনে ঠিক দিতে লেগেছেন– গিল্পীর বরাদ একসের তুধের থেকে কেটে রাখা যাক আধসের, আর আমার আফিঙের ক্ষীর থেকে, না হয় চায়ের ঘন দুধ থেকে, দিনে চার ছটাক —এই পাওয়া গেল মেয়েটার জন্তে মোটের উপর তিনবেলায় তিন পোয়া দুধ । তারপর দুজনের জন্তে যে ফুটে কৈ মাছ আনা যায়, এখন থেকে তা না করে, গিল্পীর জন্তে চুনো পুটি আর আমার জন্তে যদি একটা বাগদী চিংড়ি বরাদ্দ করে দেওয়া যায়, তবে আর একটা মেয়ের মাথায় দেবার তেলটার খরচ চলতে পারে ; আর হাতেও কিছু জমে –মাটির পুতুলটা, রাঙা চুড়িটা, সোনার পাখিটা কিনতে কাপড়ের দর যে রকম বেড়েছে, তাতে করে সোনাতোনের বছরে দেড়-জোড়া কাপড়ের দাম থেকে কত আন কত পাই কেটে নিলে, সোনার জন্তে ছমাসে সাড়েতিন-জোড়া রাঙা ডুরে আর নীলাম্বরী কাপড় হতে পারে, যখন এই হিসেবটায় এসে ঠেকেছেন খাতাঞ্চিমশায়, ঠিক সেই সময় সোনাতোন এসে বললে, ‘মেয়ের সেটের পুজে, বৌমা দোয়াত কলম চাইলেন ' সোনার কপালে বিধাতা রাত্তিরে চুপি-চুপি এসে কী হিসেব যে লিখবেন তা খাতাঞ্চিও জানেন না, কিন্তু এটা তিনি বেশ জানতেন ა თსr