পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেয়ের দাড়িয়ে নির্ভয়ে সিংহীকে দেখতে পারে। শ্যামপুকুর আর মনোহরপুকুর, এই দুই পুকুরের মাঝে, সানবাধানে মানিকতলায় সোনার গাছে চড়ে, মুক্তোর ফল মানিকের ফুল নিয়ে, রায়দের ছেলেরা বড়ো হয়েও দিন-রাত খেলা করে। আর একদিকে ফুর্তির জন্যে মোহনবাগানের ফুটবল গ্রাউণ্ড, কিন্তু রায়দের ছেলেরা সেখানে গ্রাণ্ড কাপ না হলে যায় না –পাড়ার ছেলেরাই সেখানে খেলে । গোলদিঘির দক্ষিণ ধারেই পেয়ারাবাগান, তারপরে ফড়েপুকুর, পুকুরের ধারে ফড়েদের ঘর, তারা পেয়ার গাছ জমা নিয়েছে। পুকুরের পাশে পটলডাঙার ক্ষেতে পটল হয়েছে। তারপরে বৌবাজার, মেছোবাজার-রায়গিল্পীদের মাছ আর দশহাত কাপড় এই দুই বাজার থেকে তোলা হিসেবে কেনা হয়। এরই পাশে বঁাশতলা, সেখানে কেবল মোট-মোট রায়বাঁশের ঝোপঝাড়, গুণ্ডারা এখান থেকে বাশের লাঠি সংগ্রহ করে এখনো । বাঁশতলার ধারেই বড়োবাজার, সেখানে জলের খেলা থেকে আবির খেলা পর্যন্ত না পাওয়া যায় এমন জিনিস নেই। তার পাশে আমা-ইট দিয়ে গাথা এমো পোস্তাতে ফল বিক্রি হচ্ছে। তারই কাছে বড়বাজারের পরেই ছাতুবাবুর মাঠ, বাগবাজার পর্যন্ত সেখানে এক চড়কগাছ ছাড়া আর একটি গাছ নেই দেখ। এ ছাড়া নালার ধারে মাড়েদের বাগানের পাশে ধোপা পুকুর, কাপড় কাচবার জন্যে, নাপতে বাজারেব ধারে ঝামাপুকুর, রায়গিল্পীদের আলতা পরবার পা ঘষবার জন্য ; তারপর মুচিপাড়া কুমোরটুলি এমনি সব । বড়োবাজার আর বাগবাজারের মাঝে শোভাবাজার, সেখানে রায়বাবুদের বিয়ের শোভাযাত্রার সোলার কাগজের পাহাড়, মউরপঙ্খি, কদমঝাড়, খাসগেলাস, চতুর্দেলি, মহাপায়, আসাসোটা, সঙ সমস্ত ঠাসা রয়েছে ; ইচ্ছে করে ভাড়া কর, চাও তো কিনে নাও, নয় তো বাবুদের কাছে চেয়ে আনে। এর পর বাগবাজার, সেখানে বাঘের স্থধ, বাঘের চর্বি এমনি সব আজগুবি জিনিস বিক্রি হয়। তা ছাড়া রায়মশায়ের রায়বাঘিনী গিল্পী বাগবাজারের মেয়ে, বাগে পেলে তিনি সিংহীকেও জব্দ করে ছাড়েন। ృ'రి