নাক সুড়মুড় করলে কী করতে হয়, আমি আমার জাতভাই পাখিদের শুধোতে যাব মনে করলুম, কিন্তু তখনি মনে পড়ল, যখন আমি ঝুপ করে জম্বুদ্বীপে এসে পড়লুম তখন পাখিগুলো ভয়ে কিচমিচ করে বাসা ছেড়ে পালিয়েছিল । সবাই আমাকে দেখে সরে যাচ্ছে, তবে তো আমি এখনো মানুষ আছি । ভেবে আমার কান্না এল । আমি দুইহাতে চোখ রগড়াতে-রগড়াতে কঁাদতে-কাদতে অন্ধকারে যেদিকে তুচোখ যায় সেই দিকে চললুম। দুঃখের কথা কাকে জানাই ভাবছি –এমন সময়ে গাছের উপর থেকে ভুষুণ্ডিকাগ আমার দেখে বলে উঠলেন, ‘কও ক্যা কও ক্যt.’ আমি সেই গাছের তলায় বসে কাগমশায়কে আমার নালিশ জানালুম, কেন সব পাখি আর পর আমায় দেখে পালাবে ? আমি কি মামুখ ? কাগ খানিক এক চোখ বুজে ভেবে বললেন, ‘পুতু, তুমি গায়ে ওটা কী পরে আছ ? পাখির কি তোমার মতো গায়ে কথা জড়ায় ?” আমি চেয়ে দেখলুম কোনো পাখিরই গায়ে কাথা নেই, খালি গা । কাক আবার বললেন, ‘পুতু, তোমার পায়ে ওগুলো আঙুল, না অঁাকড়ি ? আমি দেখলুম পায়ে আমার দশটাই আঙুল, একটাও অঁাকড়ি নেই । কাগা বললেন, “আচ্ছা দেখি পালক ঝাড়া দাও তো ' আমার কেবলি গা ঝাড়াই সারা হল । তবে তো আমি এখনো মানুষ আছি। যেমন এই কথা মনে হওয়া, অমনি আমার মাকে মনে পড়ে গেল। আমি ভয়ে-ভয়ে কাককে বললুম, আমি মায়ের কাছে যাব ।” গম্ভীরভাবে কাক বললেন, ‘এস', কিন্তু আমি তখনে দাড়িয়ে আছি দেখে আবার বললেন, “যাও ।” আমি কাদো-কাদে হুয়ে বললুম, আমার মনটা কেমন কেমন করছে।’ ১৩৭
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।