পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না, তাই কাক সৰ পাখিদের বলে দিয়েছিলেন, তারা সবাই আমার জন্যে রুটি, মেঠাই, সন্দেশ, এটা-ওটা মানুষদের ঘর থেকে ঠোটে করে নিয়ে আসত। মানুষের ছেলেরা খাবারের ঠোঙায় ছে দিলে পাখিদের দোষ দেয়, সেটা বড়ো ভুল। পাখিরা সেগুলো আমার জন্যে নিয়ে আসে। পাখিরা তো কথা কইতে জানে না যে মানুষের কাছে ভিক্ষ চাইবে, তাই তারা আমার খাবার ছো দিয়ে নিয়ে আসে। খাবার এনে দিত বলে পাখিদের বাসায় পাতবার জন্যে আমি আমার কাথা থেকে এক-এক টুকরো তাদের ছিড়ে দিতুম কিন্তু কাকমশায় একদিন বললেন, ‘না, কাথাটা ছিড়ে নষ্ট কর না, ওটা কাজে লাগতে পারে। আমি সেইদিন আমার ছেড়া কাথাটা এক জায়গায় লুকিয়ে ফেললুম। ক্রমে আমি পাখিবিদ্যেতে পাখিদের চেয়েও পণ্ডিত হয়ে পড়লুম। আমি গন্ধ পেলেই বুঝতে পারি হাওয়া পশ্চিম থেকে এল না পুব থেকে। বঁাশ বেড়ে উঠছে আস্তে-আস্তে, আমি তা চোখে দেখতে পেতুম, আর গাছের ডালের মধ্যে কোথায় ফল আছে, কোথায় ফুল, কোথায় পাতা, কোথায় বা গর্ত করে পোকারা তার মধ্যে চলাচলি করছে, তা পর্যন্ত আমি বলে দিতে পারতুম। আর কাকমশায় মনের সুখে থাকতে হয় কেমন করে তা আমায় শিখিয়েছিলেন, আমি পাখিদের মতো মুখে বাশি বাজিয়ে গান গেয়ে, সুখে খেয়ে মুখে ঘুমিয়ে, দিনরাত কাটাতে লাগলুম। আমি এক-একদিন সন্ধেবেলা জলের ধারে পা ঝুলিয়ে বসে বঁশিতে বাজাতুম, বাতাসের বিরবির, ঢেউয়ের বিপঝিপ, আলোর ঝিকমিক’ । জলের ধারের মাছরাঙা পাখিরা বুঝতে পারত না যে সত্যি জলে মাছ খেলা করছে না আমি বঁাশিতে বাজাচ্ছি চাদামাছের খেলার গান। কখনো আমি বঁশিতে ডিমপাড়ানো গান আস্তে-. আস্তে বাজাই, পাখিরা অমনি বাসার মধ্যে ডিম খুঁজতে থাকে। অমনি আমি ঘুমপাড়ানো গান ধরি, ত্বারা সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। গোলদিঘির ওপারেই যে আমগাছটা, সেটায় শীতকালে আমের S8 e