পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রানী আমাকে প্রথম বর দিয়ে বললেন, “এইবার শিবঠাকুরের মন গলিয়ে তোমার দ্বিতীয় বর না ও ’ আমি বললুম, আগে মাকে দেখে আসি তারপর নেব ।’ পরীরা বললে, তা হবে না। তুমি যদি পালাও । আমি তখন আমার বাঁশিতে পাগল ঝোরার গান ধরলুম, যা শুনে বরফ গলে ঝরনা হয়ে বেরিয়ে আসে, মন তো মন । শিবের মন গলে’ জটা ৰেয়ে ঝরনার মতে ঝরঝর করে পিচকিরি দিয়ে পড়তে থাকল সবার গায়। তখন পৰীর। খুশি হয়ে আমার পিঠ চাপড়াতে লাগল। যেমন পিঠ লাল হয়ে উঠল, অননি আমি উড়তে আরম্ভ করলুম। উড়তে পেয়ে প্রথমটা আমার এমন আহলাদ হল যে আমি মায়ের কথা ভুলে গেলুম। কেবলি গির্জর চুড়ে। তার মল্লমেণ্ট ঘুরতে লাগলুম তারপর শেষে আস্তে-আস্তে আমাদের বাড়িতে এসে দেখলুম জানলা খোল রয়েছে, না খাটের উপর ঘুমিয়ে পড়েছেন। আমি আস্তে পায়ের দিকে খাটের সুলটার উপরে বসলুম। ম৷ গালে হাত বেখে ঘুমিয়ে আছেন, কালে চুলের খোপাটি বালিসের উপর এলিয়ে পড়েছে। দেখাচ্ছে যেন ছোট্ট একটি পাখির বাসা, কিন্তু পাখি নেই। আমার মনে পড়ল এক-একদিন মায়ের চুল নিয়ে আমি খেলা করতুম, আর মা সেই কালে চুল দিয়ে আমাকে জড়িয়ে জাল দিয়ে পাখিধরা খেলতেন । দেখলুম তা বা হাতখানি ঘুমের ঘোরে আমাকে যেন জড়িয়ে ধরতে চাইলে, হাতে সোনার চুড়ি ঝিনবিন করে বেজে উঠল। আমি আস্তে-আস্তে তার পায়ে হাত দিলুম। ইচ্ছে হল মা বলে ডাকি, আর মা উঠে আমার গলা জড়িয়ে ধরেন। একবার ডাকলেই জানি মা জেগে উঠে আমাকে কোলে টেনে নেবেন, কিন্তু পারলুম না । মন কেন যে খোলা জানলার দিকে, আকাশভরা তারার দিকে, পাতায় ছাওয়" গাছের দিকে, গাছে ছাওয়া বাগানের দিকে, বাগানের শেষে বনের দিকে, মাঠের দিকে, বারে-বারে টানতে লাগল কে জানে! যে ছোটো বাক্সতে আমার কাপড় থাকত, সেটা খুলে দেখলুম SA H