পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ধকার, কিছুই দেখা যায় না, পুতু তার মধ্যে পকেট বই খুঁজে বেড়াতে-বেড়াতে একটা এসেন্সের শিশি উল্টে পড়ে পুতুকে নাইয়ে দেবার যোগাড় করলে। সে একখানা রুমালে তাড়াতাড়ি মাখু মুছে যেমন উঠে দাড়াবে, অমনি মাথাটা ঠক করে দেরাজের ডালায় ঠুকে গেল। পুতু তখন হামাগুড়ি দিয়ে খুঁজতে-খুজতে একটা খালি সাবানের বাক্সর মধ্যে যেমন হাত দিয়েছে, অমনি এক আরশোলা, কট করে তার আঙুল চেপে ধরলে। পুত্ব তাড়াতাড়ি সেটাকে ঝেড়ে ফেলে পালাতে গিয়ে, কাগজের ঠোঙায় কাপড় রাঙাবার গিরিন রঙ ছিল, উল্টে তারি মধ্যে পড়ল। পুতু হাতে মুখে রঙ মেখে সঙ সেজে হঁপাতে-হঁপাতে দেরাজ থেকে বেরিয়ে বললে, “আমি তো পেলুম না, তুমি দেখ। সোনা দেরাজে হাত দিতেই এক পেকেট ছচ তার হাতে ঠেকল, সে সেইটে পুতুর হাতে দিতেই, তবে চলো’ বলে পুতু একেবারে টেনে জানলার ধারে নিয়ে গেল । সোনা বললে, ‘ওমা! আমি তো উড়তে পারিনে পড়ে যাব যে ’ পুতু সোনার হাত ধরে বললে, ‘ভয় কী? উড়তে শিখিয়ে দেব । পক্ষিরাজ ঘোড়ার মতো আকাশ দিয়ে বেঁা করে উড়ে যাবে।’ সোনা বললে, ‘উ: বাবারে। আমার মাথা ঘুরবে।’ পুতুর ভয় হল বুঝি সোনা না-যেতে চায়। গল্প তা হলে কে বলবে ? সে সোনাকে লোভ দেখাতে লাগল,-“আমরা মেঘের উপরে গদি বিছিয়ে শুয়ে-শুয়ে তারাগুলোর সঙ্গে গল্প করতে-করতে উড়ে চলব, আর যখন সুমুদরের উপর দিয়ে চলব তখন দেখতে পাবে মৎস্যকন্যারা সব ঝিনুকের নৌকোয় করে মুক্তো ধরতে বেরিয়েছে।’ সোনা বলে উঠল, কী মজা ! মৎস্যকন্যাদের নেজ আছে ? পাছে না বললে সোনা যেতে না চায়, তাই পুতু চালাকি করে ৰললে, ‘তাদের মাথায় যে বারে। হাত বিমুনি, তাতেই হীরে মুক্তোর ঝাপটা, তাই দিয়ে জল কেটে তারা চলে। চলে, দেখবে কী মজা ।" ১৬৩