পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর বলতে হল না, সোনা পুতুর হাত ধরে বললে, আঙুটি পাণ্ডুটিকেও উড়তে শেখাও। ছেলেমানুষ ওদের একলাটি ফেলে আমি তো যেতে পারব না।’ পুতু বললে, ‘ওরা ছেলেমানুষ, তা তুমি যখন বলছ, তখন চলুক।” আঙুটি তক্ত থেকে আধখান ঝুলে আর পাণ্ডটি একেবারে তক্তার নিচে চিৎপাত হয়ে নাক ডাকাচ্ছিল, সোনা ঠেলা দিয়ে তুলে দিয়ে বললে, ‘ওঠে, পুতু আমাদের উড়তে শেখাবে।' পাণ্ডটি চোখ রগড়ে বললে, আমাকে তক্তায় উঠিয়ে দাও দিদি। আঙুটি অমনি তক্তার উপর সোজা দাড়িয়ে বললে, কই দেখি, ওড়াও দেখি ” পুতু জোরে এক ফু দিলে, অমনি আঙটি বেলুনের মতো ঘরের কড়িকাঠে কেবল মাথা ঠুকে-ঠুকে বেড়াতে লাগল আর পা হটো স্বতোর মতো নিচে ঝুলতে লাগল। পুতু তার পা ধরে নামিয়ে, একটা বালিস চাপা দিয়ে রেখে, কী করে দুই কাধে ডাইনে বায়ে, কী করে তুহাত ঝুলিয়ে নিচে, দুপা ছড়িয়ে চিৎ কিম্বা উপুড় হয়ে উড়তে হয়, কেমন করে বা হাত ঝুলিয়ে বা কাত বা ডান হাত ঝুলিয়ে ডান কাত মেরে বাতাস কেটে যেতে হয়, সব দেখিয়ে,দিলে । আঙুটি বললে, চলো বেরিয়ে পড়ি। পাণ্ডটি বললে, ‘চলে না, চাদের মধ্যে কী আছে দেখি । সোনা তখনো এদিক-ওদিক চাইছে, আঙটিকে চুপিচুপি বললে, ‘ভাই, বড়ো ভয় হচ্ছে, কোথায যেতে কোথায় নিয়ে যাবে, আব বাড়ি ফেরা যাবে না।’ আঙটি বড়ো হয়ে একজন মহাপণ্ডিত ভূতত্ত্ববিদ হবে, তাই পৃথিবীর একটা পরিষ্কার ম্যাপ বিধাতা খাতাঞ্চিমশায়ের খাগড়ার কলম দিয়ে মোটা-মোট লাইনে তার কপালে আঁচড়ে দিয়েছিলেন । সে বললে, কিছু ভয় নেই। সোজা উড়ে চলে, পৃথিবী যখন গোলাকার, তখন যেখান থেকে বেরিয়েছি ঘুরে ঠিক সেই শোবার ঘরেই পৌঁছব দেখো।' s $98