পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চলো সখা গৃহে চলে আমি নিশাচরদের বলছি এখনি তারা স্বর্ণসীতাকে এই দণ্ডকারণ্যে এনে উপস্থিত করবে।’ পুতু বললেন, সখে, তিনি রাজকুমারী আমি অরণ্যবাসী, তার অভ্যর্থনার জন্তে যা কিছু করতে হয় তুমি করে।’ বিভীষণ বললেন, সখে, মা জানকীর জন্যে আমি এক অপূর্ব প্রাসাদ এখনি প্রস্তুত করে দেব । ওরে " কে আছিস লঙ্কা থেকে প্রধান-প্রধান ভাস্কর কারিগর আর শিড়পিগণকে আহ্বান করে, এই রাত্রের মধ্যে মায়ের জন্যে সোনার পুরী প্রস্তুত করে দিতে আজ্ঞা করে। চলো সখে রাত্রি অধিক হল একটু বিশ্রাম করবে।’ প্রথম দৃশ্য শেষ হল ; সকলে প্রস্থান করলেন। অমনি মোট গলায় আর্গিন পাখির মুরে বেহাগ রাগিণীতে গান হল ; একে ঘোর রজনী গাঢ় তমস্বিনী ইত্যাদি। জোনক পরীকে পুতু সত্যভামার পাঠ দিয়েছিলেন, তিনি আলেয়া আর ফুলকি দুই সখী সঙ্গে আসরে এলেন। সত্যভামার গেরুয়া কাপড়, এলোচুল, কপালে সি ছরের টিপ, ঠোঁটে আলতা, মুখে পাউডার, হাতের কনুই পর্যন্ত শাদা, বাকিটা কালো, তাতে হরিনামের মালা জড়ানো, পায়ে ঘুঙুর। সখীদের মাথায় কাগজের ফুলের চেঙারি, পায়ে হাটু পর্যন্ত বিবিয়ান ঘাঘরা, উকিল ধরনে তুর্কাধে সবুজ চাদর, নাকে নোলক, কালে চামরের চুল ঘাড় পর্যন্ত, হাতে রুমাল। সত্যভামা শুরু করলেন, “সখী ! তোমরা আমাকে আর অনুরোধ কোরো না, আমি এবার নিশ্চয় বনবাসিনী হব । তোমরা ঘরে যাও সেই নির্দয়কে বলে, সত্যভামা মরেছে এখন রুক্মিনীকে তিনি দ্বারকপুরে আনাতে পারেন। সখীরা আমনি ভাঙা গলায় বলে উঠলে, “সখী সত্যভামা, ওগো রাজনন্দিনী, অমন কথা বোলো না। শুনলে আমাদের বুক ফেটে যায়। কী ছলে সন্ন্যাসিনী হবে, শিবপুজো করে দেবাদিদেব মহাদেব খুশি হলে কী না করতে পারেন ? ১৭১