পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনা বলে উঠল, জলে ভেসে তো আসিনি মা, আমি স্কে পাতাল থেকে মাটি খুড়ে বেরিয়ে এলুম, ওদিকের হিজুলী বন থেকে এদিকে একেবারে ঘরের মধ্যে।’ মা বললেন, ‘তুই তবে ভুইফোড় মেয়ে। এখন ঘুমে, ধন ধন ধন আমার কত দুখের ধন হঃখু:হরা দুখ-পাসরা দুঃখ-নিবারণ। সোনা ছটি ভায়ের সঙ্গে মায়ের কোলের কাছটিতে ঘুমিয়ে পড়ল দেখে পুতু চোখ মুছতে-মুছতে সোনাদের বাড়ি ছেড়ে চলে গেল— একল৷ সেই হিজুলী বনের দিকে। তখন ফাগুন মাস পড়ে গেছে, হিজুলী বনে এবার বসন্তের আসর সাজানো হচ্ছে, নতুন পাল। আরম্ভ হবে । পুতু বাঁশিতে বসন্তবাহার সুর ধরলে। দেখতে-দেখতে দিকবিদিক সবুজে-সবুজে আলো হয়ে উঠল। এদিকে খাতাঞ্চিমশায়ের নতুন খাতার এখনো দেরি তুমাস। তিনি সেই কালিমাখা খেরোর খাতার একটা নতুন পাতার শিয়রে লিখলেন, ১লা ফাল্গুন | চক্কোত্তিমশায়ের উড়ে যাত্রা দেখার খরচ দুইজনের একুনে মাত্র দুই আধুলি । হিসেব লিখেই খাতাঞ্চির কপালের মাংস দুজায়গায় কুঁচকে যেন দুটো নালা দেখা দিলে । তিনি কপালের নালায় হাত বুলিয়ে একবার দেখলেন আধুলি দুটো যদি গড়িয়ে সেখানে পড়ে থাকে, কিন্তু দুফোট ঘাম ছাড়া সেখানে আর কিছু হাতে ঠেকল না । সেই সময় সোনাতোন এসে চিপ করে নমস্কার করে খাতাঞ্চির পায়ের ধুলো বুকে বুলিয়ে নিলে। খাতাঞ্চি তার দিকে কটমট করে চেয়ে বললেন, ‘বিয়ে-থাওয়া করিসনি তো ? সেই সময় উঠোন থেকে সোনা চেচিয়ে বললে, সোনাতোনের বেড়ালবোঁ ফিরে এসেছে মা দেখ-সে।’ আঙুটি পাণ্ডুটি ডাকতে লাগল, আয় পুতু-তু-তু। ›ዓ\»