পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই সিন্দুকটায় জমা আছে। লক্ষ্মীপুজোর দিন রিদয়ের মা এই সিন্দুককে সি ছরের ফোট, ধানের শীষ দিয়ে সাজিয়ে পুজো করে, টিপচিপ প্রণাম করে কতবার রিয়কে বলেছেন –দেখিল, মিকে পা ঠেকাসনে, ওতে লক্ষ্মী আছেন ? সিন্দুকট রিদয়ের বাপ-মা এক-একদিন ভাদর মাসে ঠেলাঠেলি করে খুলে, তার থেকে ভারি-ভারি রুপোর গয়না, বেনারসী শাড়ি, কাসার বাসন বার করে, ঝেড়ে-পুছে যেখানকার যা গুছিয়ে রাখতেন ; কিন্তু সিন্দুকের মধ্যেটায় যে কী, রিদয় এ পর্যন্ত একদিনও দেখতে পেলে না। সে দু'পায়ের বুড়ে আঙুলে ভর দিয়ে খুব চেষ্টা কবে মরচেধরা তালা দুটোর ফুটোয় চোখ দিতে পারত ; তার উপর তার মাথা উঠত না । তালার ফুটোর মধ্যে অন্ধকারে একট-কী চকচক করছে দেখা যায়, কিন্তু সেটাকে আঙুল দিয়ে টেনে বার করবার অনেক চেষ্টা করেও রিদয় পেরে ওঠেনি। তালা দুটোকে যদি ভেঙে ফেলা যেত, তবে তালার মধ্যের জিনিস, সেই সঙ্গে সিন্দুকের মধ্যেটাও সে দেখে নিতে পারত। তালাটা কী করে ভাঙা যায় ভাবতেভাবতে রিদয়ের হাই উঠতে লাগল, আর চোখও চুলে এল। সেই সময় কুলুঙ্গি থেকে গণেশের ইছরটা জ্যান্ত হয়ে ঝুপ করে সিন্দুকের ডালায় লাফিয়ে পড়ে ল্যাজ উঠিয়ে ছুটোছুটি আরম্ভ করলে। রিদয় পষ্ট দেখতে পেলে গণেশ মোট-পেটি নিয়ে শুড় দোলাতে-দোলাতে সিংহাসন থেকে নেমে কুলুঙ্গির ধারে পা ঝুলিয়ে বসে ঢোল বাজাতে লাগলেন আর ইছরটা তালে-তালে ল্যাজ নেড়ে গলার ঘুঙুরের ঝুমঝুম শব্দ করে-করে নাচতে থাকল। রিদয় ইছর অনেক দেখেছে, গণেশের গল্পও অনেক শুনেছে, কিন্তু জ্যান্ত গণেশ সে কখনো দেখেনি! এই বুড়ো-আঙুল যতটুকু, গণেশটি ঠিক ততটুকু ! পেটটি বিলিতি-বেগুনের মতো রাঙা চিকচিকে, মাথাটি শাদা, শুড়টি ছোটো-একটি কেঁচোর মতো পেটের উপর গুটিয়ে রয়েছে ; কান-ছটি যেন ছোটাে দুখানি কুলে, তাতে সোনার মাকড়ি তুলছে ; গলায় একগাছি রুপোর তারের পৈতে Sbr&