পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওঠা-পড়ার মধ্যে বসে তার মনে হতে লাগল যেন শাদাঘটো সমুদ্রের ' ঢেউয়ের মাঝে সে তুলতে তুলতে চলেছে। প্রাণপণে খোড়া হাসের পিঠের পালক দুই মুঠোয় ধরে, কৃপায়ে গলা জড়িয়ে রিদয় স্থির হয়ে বসবার চেষ্টা করতে লাগল। মাটির উপর দিয়ে খোড়া হাসের সঙ্গে পায়ে হেঁটে যাওয়া এক, আর এক-কুড়ি-একটা উড়ন্ত হাসের হাক-ডাক, চলন্ত ডানায় ঝাপটার মধ্যে বসে ঝড়ের মতো শূন্যে উড়ে চলা আর এক! বাতাস তোলপাড় করে চলেছে হাসের দল ! কুড়ি-জোড়া দাতের মতো ঝপাঝপ উঠছে-পড়ছে জোরালো ডানা ! রিদয় দেখছে কেবল হাস আর পালক বিজবিজ করছে ! শুনছে কেবল বাতাসের ঝাপঝপ, সো সো, আর থেকে-থেকে হাসেদের হাক-ডাক | উপর-আকাশ দিয়ে যাচ্ছে, না মেঘের মধ্যে দিয়ে চলেছে, কি মাটির কাছ দিয়ে উড়ছে, বিদয় কিছুই বুঝতে পারছে না। উপর-আকাশে এমন পাতলা বাতাস যে হঠাৎ সেখানে উঠে গেলে দম নিতে কষ্ট বোধ হয়, কাজেই নূতন-সেথো –খোড়া-হাসকে একটু সামলে নেবার জন্যে বালু-হাসের দল নিচেকার ঘন হাওয়ার মধ্যে দিয়ে বরং আস্তেই চলেছে, এতেই রিদয়ের মনে হচ্ছে যেন পাশাপাশি দুটো রেল-গাড়ি পুরোদমে ছুটেছে আর তারি মাঝে এতটুকু-সে তুলতে তুলতে চলেছে ! ওড়ার প্রথম চোটট কমে এলে রিদয়ের হাস ক্রমে টাল সামলে সোজা তলে-তালে ডানা ফেলে চলতে শুরু করলে। তখন রিদয় মাটির দিকে চেয়ে দেখবার সময় পেলে । হাসের দল তখন সুন্দরবন ছাড়িয়ে বাঙলাদেশের বুকের উপর দিয়ে উড়ে চলেছে। রিদয় আকাশ থেকে দেখছে যেন সবুজ-হলদে-রাঙা-মেটে-নীল এমনি পাচ-রঙের ছক-কাটা চমৎকার একখানি র্কাথা রোদে পাতা রয়েছে। রিদয় ভাবছে এ কোনখানে এলেম ? সেই সময় বাখরগঞ্জের ধানখেতের উপর দিয়ে হাসের চলল। রিদয় দেশটা দেখে ভাবলে প্রকাও একটা যেন শতরঞ্জখেলার ছক নিচের জমিতে পাতা রয়েছে । స్కిరి:t,