পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রিদয় ভাবছে —‘বাস রে। এত বড়ো খেলার ছক, রাবণে দাবী খেলে নাকি ? আমনি যেন তার কথার উত্তর দিয়ে হাসের। হাক দিলে –‘খেত আর মাঠ, খেত আর মাঠ —বাখরগন্‌জো ? তখন রিদয়ের চোখ ফুটল। সে বুঝলে সবুজ ছকগুলো ধান-খেত —নতুন শিষে ভরে রয়েছে। হলদে ছকগুলো সরষে-খেত –সোনার ফুলে ভরে গিয়েছে। মেটে ছকগুলো খালি জমি—এখনো সেখানে ফসল গজায়নি। রাঙা ছকগুলো শোন আর পাট। সবুজ পাড়দেওয়া মেটে-মেটে ছকগুলো খালি জমির ধারে-ধারে গাছের সার। মাঝে-মাঝে বড়ো-বড়ো সবুজ দাগগুলো সব বন। কোথাও সোনালি, কোথাও লাল, কোথাও ফিকে নীলের ধারে ঘন সবুজ ছককাটা ডোর-টানা জায়গাগুলো নদীর ধারে গ্রামগুলি—ঘর-ঘর পাড়াপাড়া ভাগ করা রয়েছে। কতকগুলো ছকের মাঝে ঘন সবুজ, ধারে-ধারে খয়েরী রঙ —সেগুলো হচ্ছে আম-কাঠালের বাগান —মাটির পাচিল-ঘেরা। নদী, নালা, খালগুলো রিদয় দেখলে যেন রুপোলি ডোরার নক্সা –আলোতে বিকঝিক করছে। নতুন ফল, নতুন পাতা যেন সবুজ মখমলের উপরে এখানে-ওখানে কারচোপের কাজ —যতদূর চোখ চলে এমনি | আকাশ থেকে মাটি যেন শতরঞ্চি হয়ে গেছে দেখে রিদয় মজা পেয়েছে ; সে হাততালি দিয়ে যেমন বলেছে--"বাঃ, কী তামাশা ? আমনি হাসেরা যেন তাকে থমকে বলে উঠল—‘সেরা দেশ-সোনার দেশ-সবুজ দেশ—ফলন্তফুলন্ত বাঙলা-দেশ ! রিদয় একবার গণেশকে নিয়ে হাসি-তামাশা করতে গিয়ে বিপদে পড়েছে, হাসের ধমক শুনে মুখ বুজে গম্ভীর ভালোমানুষটির মতে পিটপিট করে চারদিকে চাইতে লাগল আর মিটমিট করে একটু-আধটু হাসতেও থাকল —খুব ঠোট চেপে । দলে-দলে কত পাখি —কেউ চলেছে দক্ষিণ থেকে উত্তরে, কেউ উত্তর থেকে দক্ষিণে, পুব থেকে পশ্চিমে, পশ্চিম থেকে পুবে ; আর পথের মাঝে দেখা হলেই এদল ওদলকে শুখাচ্ছে —এদিকের খবর, ওদিকের খবর— ఇeఆ