পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারি মজা, উড়তে মজা –শীতে মজা –পাহাড়ে মজা। উড়তে শেখাব ; চলে এস না ? সরাল, ঘেংরাল কোথাও উড়ে যাবে না ; যেখানকার সেখানে থাকবে, অথচ উড়তে পারে না বললে তারা ভারি চটবে ; এবারে বুনো হাসের কথায় তারা জবাবই দিলে না। তখন বালু-হাসের দল একেবারে মাটির কাছে নেমে এসে বলে উঠল—‘ওরে হাস নয় রে—ভেড়া " তারপর হাঃ-হাঃ করে হাসতে-হাসতে ডানায় তালি দিতে-দিতে আবার আকাশে উঠল। নিচে থেকে ঘোরা-হাস তারা গলা চিরে গালাগালি শুরু করলে –‘মর, মর! গুলি খেয়ে মর, শিল পড়ে মর, বাতে ধরে মর, বাজ পড়ে মর, বিদেশে মর, বিভুয়ে মর! এমনি হাসি-তামাশার মধ্যে রিদয় আনন্দে চলেছে। কিন্তু তবু নিজের দুরবস্থা ভেবে—সে যে মা-বাপ ঘর-বাড়ি ছেড়ে কোথায় নির্বাসনে চলেছে, সে কথা মনে করে –এক-একবার তার চোখে জলও আসছে। কিন্তু তবু এই আকাশ দিয়ে একেবারে হু-হু করে উড়ে চলায় কী মজা, কত আনন্দ ! বাতাসে কোথাও ভিজে মাটির গন্ধ, কোথাও ফোট-ফুলের খোসবো, কোথাও পাকা ফলের কী মিঠে বাসই আসছে! পৃথিবীর গায়ের বাতাস যে এমন সুগন্ধে ভরা রিদয় আগে তো জানেনি ! মেঘের উপর দিয়ে জলের চেয়ে পরিষ্কার বাতাসের উপর দিয়ে ভেসে চলতে-চলতে রিদয়ের মনে হতে লাগল যেন সব দুঃখ, সব কষ্ট, পৃথিবীর যত কিছু জ্বালা-যন্ত্রণা ছেড়ে সে সত্যি উঠে এসেছে সেইখানে, যেখানে ধুলো নেই, বালি নেই, ভয় নেই, ভাবনা নেই, রোগ নেই, শোক নেই—কেবলি আনন্দে উড়ে চলা দিন-রাত । &> :