পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গা-ঝাড়া দিয়ে জলে নেমে শর-বেণার ঝাড় ঠেলে সাঁতরে-সাঁতরে খাবারের সন্ধান করতে লাগল । বুনো ইসিগুলো নেমেই জলে গিয়ে পড়েছিল ; খোড় ইসের কোনো খবরই নেয়নি ; দিব্যি চান করে ডান ঝেড়ে গুগলি-শামুক শাক-পাত খেয়ে বেড়াচ্ছে। রিদয়ের হাস জলে নেমেই স্ববচনীর রুপায় একটা পাকাল মাছ পেয়ে গেল। সে সেইটে মুখে নিয়ে ডাঙায় এসে রিদয়ের কাছে ফেলে দিয়ে বললে –এই নাৎ মাছট তোমায় দিলুম। আমার যে উপকার করেছ, তা চিরদিন মনে থাকবে । খেয়ে নাও মাছটা ? স্থলের কাছে দুটো মিষ্টি কথা পেয়ে রিদয় একেবারে গলে গেল। তার মনে হল সেই খোড়া-হাসের গলা ধরে তার হঠাট ইটাে চুমু খায়। রিদয় কাদা থেকে মাছটি তুলে একবার ভাবলে —রবি কিসে? অমনি মনে পড়ল—সে যে, এখন আর মানুষ নেই, যক হয়েছে , হয়তো কাচা মাছ খেতে পারবে। রিদমের ট্যাকে এটা ওটা কাটতে একটা ছুরি থাকত , সে সেইটে টেনে বরি করে মাছটা কুটতে বসল। ছরিটা এখন একটা খড়কে-কাঠির মতো ছোটাে হয়ে গেছে, কিন্তু তাতেই কাজ চলে গেল। মাছটা ছোটোছোটাে করে বানিয়ে কতক-কতক হাসকে খাইয়ে দিয়ে, নিজে খেতে বসল। তার যকের মুখে কাচা মাছ নেহাত মন্দ লাগল না। রিদয়ের খাওয়া হলে খোড়া তাকে চুপি-চুপি বললে যে চকনিকোবরের দল পোষা হাসকে হাসের মধ্যে গণ্য করে না। রিদয় চুপি-চুপি বললে –‘তা তো দেখতে পাচ্ছি। খোড়া হাস গলা-ফুলিয়ে বললে –‘মজা হয়, যদি একবার এদের সঙ্গে সমানে আমিও মানস সরোবর পর্যন্ত উড়ে যেতে পারি। পোষা হাস কী করতে পারে তবে ওরা টের পায়।’ তা তো বটেই।’ বলে রিদয় চুপ করলে । খোড়া বলে চলল –‘আমার মনে হয় একলা আমি এতটা যেতে পারি কি না। কিন্তু তুমি যদি সঙ্গে চল, তবে আমি সাহস করি। . ૨૭ (t