পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

.এমনি বেকায়দায় লটপট করে উড়ে আসছে যে খেকশেয়াল ভাবঙ্গে —একে তো ধরেছি। কিন্তু বারবার তিনবার ঠকে শেয়াল বিরক্ত হয়ে উঠেছে। সে হাসের দিক থেকে মুখটা ফিরিয়ে গেী হয়ে রইল । ন্থে পথে আগের তিনটি হাস গেছে, এটাও সেই-পথ ধরে ঝাউতলায় এসে শেয়ালের এত কাছ দিয়ে চলল যে শেয়াল আর থির থাকতে না পেরে দিয়েছে লাক এমন জোরে যে তার ল্যাজট ঠেকল হাসের পিঠে। কিন্তু হাসও পাকা ; সে সী-করে শেয়ালের পেটের নিচে দিয়ে গলে তার বাটার মতো ল্যাজে ডানার এক খাপ্পড় বসিয়ে হাসতে-হাসতে চম্পট দিলে। শেয়ালের আর দম নেবার সময় হল না, বাপ-ঝপ করে আরো গোটা-পাচেক হাস নাকের সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেল, একটাকেও সে ধরতে পারলে ন। —লাফানি-ব্যাপানি সার হল ! এবারে পর-পর আরার পাঁচটা ইসি একে একে শেয়ালকে লোভ দেখিয়ে সজোরে-তার পিঠে ডানার বাতাস দিয়ে হোঃ-হোঃ করে হাসতে-হাসতে একেবারে তার রগ ঘেষে চলে গেল ; কিন্তু শেয়াল না-রাম, না-গঙ্গ। —চুপ করে বসে রইল। সে বুঝেছে চক-নিকোবরের দল কাল রাতে হাস নিয়ে যাওয়ার শোধ তুলতে মস্করা লাগিয়েছে। অনেকক্ষণ আর হাসদের দেখা নেই, শেয়াল ভাবচে তারা গেছে, এমন সময় চক-নিকোবর দেখা দিলেন। তার সেই পাকা পালক, ছিনে গল দেখেই শেয়াল তাকে চিনে নিলে। একটা ডানা বেঁকিয়ে খোড়াতে-খোড়াতে এক-কাৎ হয়ে সে উড়ে এল—একেবারে যেন চলতেই পারে না, এই ভাবে । শেয়াল এবারে লাফ দিয়ে নদীর ধার পর্যন্ত হাসটাকে তাড়িয়ে গেল ; কিন্তু হাস যেন ধরা দিয়েও ধরা দিলে না ; সোজা গিয়ে চরে বসে প্যাক-প্যাক করে হেসে উঠল। শেয়াল একেবারে লজ্জায় লাল হয়ে জঙ্গলের দিকে ফিরে দেখলে— এবার চমৎকার ধবধবে মোটা-সোটা রাজহাস তার দিকে উড়ে আসছে। বনের অন্ধকারে তার শাদা ডানা-ফুখানা যেন রূপোর মতো বকবক করছে। এবারে শেয়ালের নোলা সকসক করে উঠল। ९२४