পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে এমন লাফ দিলে যে, ঝাউ-গাছের পাতাগুলো তার গায়ে খোচ মারলে, কিন্তু খোড়া রাজহাস ধরা পড়ল না—সোজা কাউ-গাছ ঘুরে চড়ায় গিয়ে উঠল। এর পরে আর হাসের সাড়া-শব্দ নেই ; সব চুপচাপ। শেয়াল ঝাউগাছের দিকে চেয়ে দেখলে, ছেলেটাও সেখান থেকে সরে পড়েছে। শেয়াল ফ্যালফ্যাল করে . চারদিকে চাইছে এমন সময় চড়ার দিক থেকে একে-একে হাস সব আগেকার মতো তাকে লোভ দেখিয়ে উড়ে চলল। কিন্তু শেয়ালের তখন মাথার ঠিক নেই ; সে পাগলের মতো কেবল ঝাপাঝাপি-লাফালাফি করতে থাকল আর কেবলি হাস তার নাকের সামনে দিয়ে যেতে থাকল —এক, দুই, তিন, চার, পাচ, দশ, পনেরো, কুড়ি, বাইশ ! শেয়াল তাদের একটি পালক পর্যন্ত ছিড়ে নিতে পারলে না। শেয়াল এমন নাকাস কখনো হয়নি , চাদপুরের শেয়াল সে, কতবার গুলির মুখ থেকে মুরগি-হাস শিকার করছে তার ঠিক নেই ; শেয়ালের রাজা বললেই হয় ; কিন্তু এই শীতকালে হাস শিকার করতে আজ তার ঘাম ছুটে গেল ! সারাদিন ধরে মোটা-সোটা চিকচিকে হাস দলেদলে তার নাকের উপর দিয়ে যাওয়া-আসা করছে, অথচ একটাকেও সে ধরে খিদে মেটাতে পারছে না! সব চেয়ে তার লজ্জা—মানুষটাও তাকে ফঁাকি দিয়ে পালিয়েছে । আর তার দুর্দশার কথা সেই পোষা রাজহাসটাও জেনে গেল ! দেশে-দেশে নিশ্চয়ই তার চাদপুরের খেকশেয়ালের কীর্তি-কাহিনী রাষ্ট্র করে দেবেইদেবে। ভোরে এই শেয়ালের গা চিকচিকে, লাজ মোট, রোয়াগুলো কেমন যেন সাটিনের মতো খয়েরি-কালো-শাদা ঝকঝক করছিল ; কিন্তু বিকেলে তার পেটের চামড়া ঝুলে পড়েছে, গা ধুলোয়-বামে কাদা হয়ে গেছে, চোখ ঝিমিয়ে পড়েছে জিভ চার-আঙুল বেরিয়ে পড়ে মুখে গোটানাল ভাঙছে। তাকে দেখে কে বলবে সকালের সেই ঘরস্ত শেয়াল । সারাদিন ধরে কেবলি উড়ে-উড়ে হাসের দল २२**