পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুড়ো-আংলা মানুষ এল, ফুটে বাচ্ছা দিয়ে গেল। মহন্ত ঠাকুর বড়ো দয়াল ! খাচা খুলে, ছেড়ে দিলে বাচ্ছা-সমেত কাঠ-বেড়াল। মজার খবর এক পয়সা –পড়ে দেখ এক পয়সা । কাগুটা হয়েছিল এই : কাঠবেড়ালের বৌটি ছিল একেবারে: শাদ ধপ-ধপে ; তার একটা রোয়াও কালে ছিল না! চোখ-দুটি । মানিকের মতো লাল টুকটুকে, পাগুলি গোলাপী, এমন কাঠবেড়ালি আলিপুরেও নেই। এ এক নতুনতর ছিষ্টি ! গায়ের ছেলে-বুড়ে, রেল-কোম্পানির সায়েব-স্থবো তাকে ধরতে কত ফাঁদই পেতেছে, কিন্তু এ-পর্যন্ত কাঠবেড়ালি ধরা দেয়নি। পোষপার্বণের দিন বাদামতলি দিয়ে আসতে-আসতে এক চাষা এই কাঠবেড়ালিকে টোক চাপা দিয়ে হঠাৎ কেমন করে পাকড়াও করে ঘরে এনে একটা বিলিকি ইছরের ফঁাচায় বন্ধ করলে। পাড়ার লোক –ছেলেবুড়ে, এই আশ্চর্য কাঠবেড়ালি দেখতে দলে-দলে ছুটে এল। এক ডোম তার জন্তে এক চমৎকার খাচা-কল তৈরি করে এনে দিলে। খাচার মধ্যে শোবার খাট, দোলবার দোলন, দুধের বাটি, খাবার খৈ রাখবার ঝাপি, বসবার চৌকি —এমনি সব ঘর-কল্লার ছোটোছোটো সামিগ্রী দিয়ে সাজানো। সবাই ভাবলে, এমন খাচায় কাঠবেড়ালি মুখে থাকবে –খেলে বেড়াবে সারাদিন দোলনায় ফুলবে আর খৈ-দুধ খেয়ে মোটা হবে! কিন্তু কাঠ ডালি-বেী চুপটি করে মুখ লুকিয়ে খাচার কোণে বসে রইল আর থেকে-থেকে কিচ-কিচ করে র্কাদতে থাকল। সারাদিন সে কিছু মুখে দিলে না, দোলনাতেও তুললে না, চেকিতেও বসল না, খাটেও শুল না ; কেবলি ছটফট করতে লাগল আর র্কাদতে থাকল । সুরেশ্বরের পুজো দেবার জন্তে চাষার বে। সেদিন মালপো ভাজছিল আর সব পাড়ার মেয়েরা পিঠে-পার্বণের পিঠে গডছিল । রান্নাঘরে ভারি ধুম লেগে গেছে। উমুন জ্বলেছে ; ছেলে-মেয়ের পিঠে ভাজার ছ্যাকর্ছ্যাক শব্দ পেয়ে সেদিক দৌড়েছে। চাষার ২৩৭