পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাচাটা খুঁজে দেখতে বুড়ি উঠল। বুড়ির কালো-বেড়ালও এতক্ষণ খাচার দিকে নজর দিচ্ছিল, সেও উঠে অন্ধকারে গঢিাকা হয়ে দাঁড়াল কী হয় দেখতে। বুড়ি পৌষমাসের হিমে উঠোন দিয়ে চলেছে, এমন সময় আবার পায়ের শব্দ, আবার, বুড়ো-আলো হাতে দুটাে কী নিয়ে। এবারে বুড়ো-আংলার হাতের জিনিস কিচ কিচ করে ডেকে উঠল। বুড়ি বুঝলে যক কাঠবেড়ালির স্থানা-গুলিকে দিতে এসেছে —তাদের মায়ের কাছে। দিদিমা উঠোনে দাড়িয়ে দেখলেন, যকৃ আগের মতো খাচার কাছে গেল, কিন্তু বেড়ালের চোখ অন্ধকারে জলছে দেখে, সে যেখানকার সেইখানেই দাড়িয়ে চারিদিক দেখতে লাগল –ছানা দুটি বুকে নিয়ে। উঠোনে বুড়িকে দেখে ছুটে এসে তার হাতে একটি ছানা দিয়ে বুড়ো-আংলা আগের মতো কাট-বেয়ে একটির পর একটি ছানাকে খাচায় পুরে দিয়ে বুড়িকে পেন্নাম করে চলে গেল। বুড়ি ঘরে এসে সবার কাছে এই গল্প করলে, কিন্তু কেউ সেটা বিশ্বাস করতে চাইলে না –দিদিমা স্বপন দেখেছে বলে উড়িয়ে দিলে। কিন্তু বুড়ি বলতে লাগল –‘ওরে তোরা দেখে আয় না? - সকালে সত্যি দেখা গেল চারটে ছানাকে নিয়ে কাঠবেড়ালি দুধ খাওয়াচ্ছে। এমন ঘটনা কেউ দেখেনি। সুরেশ্বরের মোহন্ত পর্যন্ত এই আশ্চর্য ঘটনা দেখতে হাতি চড়ে চাষার বাড়ি উপস্থিত ! ওদিকে চাষার বোঁ যত পিঠে সিদ্ধ করে, সবই পুড়ে ছাই হয়ে যায়, সুরেশ্বরের মালপো-ভোগও হয় না, তখন মোহন্ত পরামর্শ দিলেন – ওই কাঠবেড়ালি নিশ্চয় সুরেশ্বরী, নয় আর-কোনো দেবী, ওকে ছানা-পোনা মুদ্ধ বন্ধ করেছ, হয়তো সুরেশ্বর তাই রাগ করেছেন। না হলে মালপো-ভোগ পিঠে-ভোগ হঠাৎ পুড়েই বা যায় কেন ? যাও, এখনি ওঁদের যেখানে বাসা, সেইখানে দিয়ে এস। না হলে আরো বিপদ ঘটতে পারে। চাষা তো ভয়ে অস্থির। গ্রামমৃদ্ধ কেউ আর খাচায় হাত দিতে সাহস পায় না। তখন সবাই মিলে দিদিমাকে সেই খাচা নিয়ে ২৩৯