পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডানার পালক ভিজে তাদের বুকের পালকে পর্যন্ত জল সেধিয়েছে, পাহাড়-পর্বত চড়াই-নাবাই গাছ-পালা ঘন কুয়াশায় ঝাপসা হয়ে মিলিয়ে গেছে —হ'হাত আগে নজর চলে না। পাখিদের গান থেমে গেছে। হাসেরা চলেছে, ধীরে-ধীরে পথ খুজে-খুজে ; রিদয় কেবলি শীতে কঁপিছে আর ভাবছে, চুরি করার এই শাস্তি । এই মেঘ আর কুয়াশার মধ্যে দিয়ে চক-নিকোবর যখন তাদের কটিকে নিয়ে সিংচল পাহাড়ের সিংএ একটা ঝাউতলায় এসে বসল, তখন যেন রিদ্রয় হাফ ছেডে বাচল । পাহাড়ের চুড়োয় কেবল সোনালি ঘাসের বন আর এক-একটা ছাতের মতো প্রকাগু-প্রকাণ্ড পাথর বরফ পড়ে শাদা হযে রয়েছে –কোথাও-কোথাও নালা দিয়ে বরফ জল বয়ে বয়ে চলেছে, পাতায়-পাতায় টিপটিপ করে বিষ্টি লাগছে কিন্তু শীত হলেও হাওয়া এখানে এমন পরিষ্কার যে রিদয় আনন্দে এদিকে-ওদিকে ছুটে বেড়াতে লাগল। বুনো টেপারি সোনালি পাতা রুপোলি পাতা সোনা-ঘাস রুপো-ঘাস তুলে-তুলে রিদয় বোঝা বাধছে দেখে চকা হেসে বললে –‘এগুলো হবে কী—’ রিদয় অমনি বলে উঠল –‘দেশে গিয়ে দেখাব ? খোড়া হাস ভয়ে পেয়ে বললে –‘ওই মস্ত বোঝা নিয়ে ওড়া আমার কর্ম নয়, তুমি তবে রেলে করে বাড়ি যাও ! চক রিদয়কে ডেকে বললে –‘খুব-কাজের জিনিস ছড়া একটি বাজে জিনিস সঙ্গে নেওয়া আমাদের নিয়ম নয়, পেট ভয়ে টেপারি খাও তাতে আপত্তি নেই, ঘাস ছ’কানে ছটো গুজতে পার তার বেশি নয়।’ রিদয় দু’কানে দুটো ঘাস গুজে টে পারি খেয়ে বেড়াচ্ছে এমন সময় ভালুকের সঙ্গে দেখা ! রিদয় ভালুক নাচ অনেক দেখেছে কিন্তু এত-বড়ো এমন রোয়াওয়ালা কালো মিস ভালুক সে কোনোদিন দেখেনি, ভালুক তাকে দেখে স্ক'পা তুলে থপথপ করে এগিয়ে এসে বললে –‘এখানে মানুষ হয়ে কী করতে এসেছ ? পালাও, না হলে শীতে মরে যাবে, বড়ো খারাপ জায়গা। গোরাগুলে। SC