পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দোকানের মধ্যে ফুটবল পোস্টকার্ড নানা পুতুল লজঞ্চুস মার্বেল এমনি সব সাজানে, দরজার উপরটায় একটা বিভীষণের মুখোশ হণ করে চোখ পাকিয়ে চেয়ে রয়েছে। রিদয় মুখোশটার দিকে অবাক হয়ে চেয়ে আছে, এমন সময় এক বাবু দোকানে ঢুকেই বলে উঠলেন –‘ওহে মার্কও, ছোটে-খাটাে ছুটাে পুতুল দাও দেখি, টুম্ন আর স্বরূপার জন্তে ? মার্কও তাড়াতাড়ি রিদয় যে বাক্সে ছিল সেই বাক্সে আর একটা বিবি পুতুল দিয়ে কাগজে মুড়ে বাবুর হাতে দিলে। . বাবু সেটাকে আলখাল্লার পকেটে ফেলে চুরুট ধরিয়ে পাহাড়ে রাস্তায় ঠকঠক লাঠি ঠুকতে কতে বাড়ি-মুখো হলেন। পকেটের মধ্যে গরম পেয়ে রিদয় বিবি পুতুলটির পাশে ঘুমিয়ে পড়ল, আবার যখন চোখ মেলে চাইলে তখন দেখলে বাক্সর ডালাটা খুলে গেছে। একটা কাচমোড়া বারাণ্ডায় গোটাকতক তুলি, এক বাক্স রঙ, একটা গদীমোড়া চৌকি, তারি উপরে একটা এতটুকু কালো কুকুর বাক্স থেকে তাকে টানাটানি করে খেলবার চেষ্টা করছে। কুকুরটা যদি কামড়ে দেয় – রিদয় ভাবছে, এমন সময় ওঘর থেকে ডাক এল টিম-টমটমাসে। কুকুরটা দৌড়ে ওঘরে গেল সেই ফঁাকে রিদয় বাক্স থেকে চোচা দৌড় । 新 বাড়ির বাইরে থেকে সার্শিতে মুখ লাগিয়ে দেখলে একটা লাল কম্বল-পাত খাটে ছেলে মেয়ে একদল বসে তাদের বড়ো ভাইটিব কাছে গল্প শুনছে আর একটা ছোটো ছেলে লাল ভুটিয়ার কাপড় পরে যে গল্প বলছে তার গলা জড়িয়ে ডাকছে —‘পাখম দাদা, পাখম দাদা ? শীতের রাতে আগুন জ্বালা ঘরখানি —এই ছেলের দল, এই হাসি খুশি গল্প দেখে রিদয়ের চোখে জল আয়তে লাগল। তারও ঘর আছে তারও দাদা আছে, দিদি আছে, অথচ সব থেকেও নেই! কোথায় রইল তাদের আমতলি, কোথায় সেই মাটির দেওয়ালদেওয়া ঘরগুলি ! রিদয়ের প্রাণ চাইছে এই ছেলেদের সঙ্গে একসঙ্গে (8