পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পারলেন না, চমৎকার! সুজলা সুফল –বীজ ছড়ালেই ফসল, কোথাও উচু-নিচু এবড়ো-খেবড়ো পাহাড়-পর্বত নেই বললেই হয়, যতদূর চোখ চলে সবুজ খেত আর জলা। বিশ্বামিত্র দাড়ি নেড়ে বললেন –‘হ্যা, এবারের ছিষ্টট হয়েছে মন্দ নয়, কিন্তু আমার দেশটা আরো ভালো হয়েছে দেখতে বলে বিশ্বামিত্র বিশ্বকর্মাকে উত্তর ভারতবর্ষটা কেমন হয়েছে দেখতে বললেন । বিশ্বকৰ্মার আদড় উলটে পালটে বিশ্বামিত্র গড়েছেন। পাঞ্জাবে টেনেছেন পাচটা নদীর খাত কিন্তু সেখানকার জমিতে সার মাটি না দিয়ে তিনি দিয়েছেন বালি আর কাকর, ধানও হবে না, মানুষ গুলো কেবল যেন জল খেয়েই থাকবে । তারপর পাহাড় অঞ্চলে দুজনে উপস্থিত —বিশ্বকর্ম বিশ্বামিত্রের কীর্তি দেখে অবাক! সেখানে যা পেরেছেন পাথর সবগুড়ো জড়ো করে এক হিমালয় পাহাড়ের ছিষ্টি করে বসেছেন বিশ্বামিত্র। র্তার চিরকাল মাথায় আছে সূর্যের তাপ —গাছপালা মানুষ গরু সব জিনিসের পক্ষে ভালো, কাজেই তার ছিষ্টি-করা পাহাড় দেশ তিনি যতটা পারেন সূর্যের কাছে ঠেলে তুলেছেন আর সেই সব পাথরের গায়ে এখানে-ওখানে দু’চার মুঠে। মাটি ছড়িয়ে দু-একটা ঘাসের চাপড়া লাগিয়ে দিয়ে হাত গুটিয়ে বসেছেন । বিশ্বামিত্র একগাল হেসে যেমন বলেছেন, ‘কেমন দাদা, ভালো হয়নি? অমনি কুপকুপ করে এক পশলা বিষ্টি নামল আর পাহাড়ের সব মাটি ঘাস ধুয়ে গিয়ে খালি পাথর আর মুড়ি বেরিয়ে পড়ল। এদিকে পাহাড়ের এখানে-ওখানে উপরে নিচেয় এত বিষ্টির জল জমা হল যে তাতে সারা পৃথিবীর নদীতে জল দেওয়া চলে। বিশ্বকর্ম বলে উঠলেন —‘করেছ কী, সব উলটো-পালটা ! যেখানে মাটি চাই, সেখানে দিয়েছ কাকর, যেখানে জল দরকার সেখানে দিয়েছ বালি, আর যেখানে জল মোটেই দরকার নেই সেখানে জমা করেছ রাজ্যের জলাশয়, তোমার মৎলব তো কিছু বোঝা গেল না ? २७s