পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দাৰ্জিলিঙ মেল আসতে এখনো তিন ঘণ্টা। স্টেশনে লোকজন নেই, হোটেলগুলোর টিনের ছাত বিষ্টিতে ভিজে চাদের আলোয় ঝকঝক করছে। পাহাড়ের অন্ধকার ছেড়ে হঠাৎ ফাকায় পড়ে রিদয়ের ধাধা লেগে গেল। আকাশ থেকে সে টিনের ছাতগুলোকে দেখছে যেন ছোটো-ছোটে। পাহাড়ের চুড়ো শাদ বরফে ঢাকা । হাসেরা সেই দিকে নেমে চলল দেখে রিদয় চেচিয়ে বললে –‘কর কী, ওখানে যে খালি বরফ, বসবার জায়গা কোথা ? কিন্তু হাসের তার কথায় কান না দিয়ে নেমেই চলল । রিদয় দেখলে পাহাড়ের মধ্যে দাড়িয়ে আকাশে দুই হাত ছড়িয়ে একটা যেন দৈত্য লাল সবুজ দুটো চোখ নিয়ে কটমট করে তার দিকে চেয়ে রয়েছে ! রিদয়ের আরো ভয় হল । সে দুই পা গুটিয়ে হাসের পিঠের পালকে লুকোবার চেষ্টা করছে এমন সময় হাসের ঝুপঝাপ করে স্টেশনের টিনের ছাতে নেমে পড়ল। তখন রিদয়েব ভুল ভাঙল, সে দেখলে রাস্তার আলোগুলোকে ভেবেছিল সব তারা, টিনের ছাদগুলোকে পাহাড়ের চুড়ে —আর লাল সবুজ লণ্ঠন দেওয়া সিগনেল পোস্টটাকে একটা দৈত্য । রিদয় স্টেশন কখনো দেখেনি, টিনের ছাতে ছুটোছুটি কবে এদিক-ওদিক দেখতে আরম্ভ করলে, স্টেশনের সব উচু চুডোয় ছুটে কাটা উত্তর দক্ষিণ দেখতে আরম্ভ করলে, স্টেশনের সব উচু চুড়োয় ফুটে কাটা উত্তর দক্ষিণ কোনদিকে বাতাস বইছে দেখবার জন্তে কেবলি ঘুরছে, তারি উপরে একটি গোল, সেই গোলায় এক-পা রেখে আকাশে চিমটের মতো দুই ঠোট উঠিয়ে কঙ্ক-পাখি আবামে ঘুম দিচ্ছেন। রিদয়কে টিনের উপর ছুটে-ছুটি করতে শুনে কস্কপাখি গোলার উপর থেকে ধমকে উঠলেন –‘গোল করে কে ? রিদয়ের তুষ্টুমি গেছে কিন্তু ফষ্টিনষ্টি করবার বাতিক এখনো খুব আছে। সে অমনি বলে উঠল –‘গোল আর করবে কে, গোলের মাঝে বসে আছ তুমি, তোমার এ কাজ ? ‘ভালে রে ভালো বলেছিস’ বলে কঙ্ক-পাখি চিমটের মতো "b"