পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নদীতে নেমে পড়ল, শাদা-শাদা ফেনা নিয়ে চারদিকে সাপের ফণার মতো ঢেউ উঠছে পড়ছে, একটার পিছে তেড়ে আসছে আর একটা, মাথার উপব ঝড় ডাকছে সো-সো, চারদিকে জল ডাকছে গো-গো, নদীতে একখানি নৌকা নেই, একটি ডিঙিও নেই, কেবল মাঝনদীতে ঢেউয়ের উপরে-উপরে স্রোতের মুখে ভেসে চলেছে মোচার মতো হাস কটি । wo জলে পড়ে হাসদের কোনো কষ্ট নেই। স্রোতে গা ভাসিয়ে একগাছ ছেড়া মালার মতো, ঢেউয়ের সঙ্গে উঠে পড়ে চলেছে। কেবল চকার ভয় হচ্ছে পাছে দলটা ছড়িভঙ্গ হয়ে পড়ে। তাই সে থেকে-থেকে ডাক দিচ্ছে —‘কোথায় ? আমনি বাকি হাসের। উত্তর দিচ্ছে —‘হেথায়-হেথায় ? চকা একবার রিদয়কে ডাক দিচ্ছে —‘হংপাল-হংপাল |’ রিদয় আমনি উত্তর দিচ্ছে —‘ভাসানভাসান। আকাশ দিয়ে স্থলচর পাখিরা ঝড়ে লুটোপুটি হয়ে চলেছে। হাসের দিবিব আছে দেখে তারা বলতে-বলতে উড়ে চলল —‘সাতার-সাতার উ-উ-উ গেছি-গেছি-গেছি, মরি-মরি-মরি ? কিন্তু ঢেউয়ের উপর দিয়ে দড়িছেড়া নৌকার মতো তুলতে-তুলতে চলাতেও বিপদ আছে । চকা দেখলে হাসের ডানায় মুখ গুজে ঘুমিয়ে পড়বার যোগাড় করছে, সে অমনি সবাইকে সাবধান করতে লাগল –‘ঘুমেসারা দলছাড়া, দলছাড, গেছ-মার, চোখ খোল চোখ মেল।” চকণ বলছে বটে চোখ থেলি কিন্তু নিজেরও তার চোখ ঢুলে এসেছে, অন্য হাসগুলো তো একঘুম ঘুমিয়েই নিচ্চে । ঠিক সেই সময় সামনের একটা ঢেউয়ের মাথায় পোড়া কাঠের মতো একটা কী ভেসে উঠল । চকার অমনি চটকা ভেঙে গেল – সে কুমির-কুমির বলেই দুই ডানার ঝাপটা মেরে সোজা আকাশে উড়ে পড়ল, খোড়া হাস রিদয়কে নিয়ে যেমন জল ছেড়েছে আর কুমির জল থেকে ঝম্প দিয়ে তার খোড়াপয়ে একটা দাতের আঁচড় বসিয়ে ডুব মারলে। খোড়া ইস বলে এক লাফে আর পাঁচ হাত २४१