পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এগিয়ে গর্তের মধ্যে কঁাপিয়ে পড়ল। ডোমকাক তাড়াতাড়ি পেটরার উপরে চেপে বললে –‘রও-রও’। , তারপর শেয়াল এগিয়ে এসে বললে –‘আমি সেই যকের সন্ধান তোমাদের দিতে পারি, যদি তোমরা এই সিন্দুক খুলিয়ে নিয়ে যকৃটিকে আমার পেট ভরাবার জন্তে দিতে রাজি হও।’ কাকেরা শেয়ালের কথায় রাজি হলে শেয়াল তাদের রিদয়ের খবর জানিয়ে দিলে। তিনকুড়ি কাক সঙ্গে ডোমরাজা টোড়াকাককে সঙ্গে নিয়ে যক্ ধরতে চলল পাহাড়-জঙ্গলের উপর দিয়ে। হাড়গিলের রাজা খাম্বাজং যখন চৌষট্টিখানা নাটবাড়ির নহবতখানার চুড়োয় পশ্চিমমুণে হয়ে রিদয়ের আশায় রয়েছেন, আর কাকদের রাজা ডোম রিদয়কে ধরবার জন্তে বনে-জঙ্গলে সন্ধান করে বেড়াচ্ছে, সেই সময় গণেশের নেংটি ইত্বরদের সঙ্গে পাহাড়ি চুয়োদের যুদ্ধ বেধে গেল। ব্রহ্মপুত্র আর বড়োনদীর মোহনার পুরোনো নাটবাড়িট ইত্বরদের দখলে কতকাল থেকে আছে তার ঠিকানা নেই। দেওয়ানগিরির উপরের কেল্লার মতো আড়িমাও রাজাদের নাটবাড়ি, প্রকাণ্ড কারখানা, এত বড়ো নাটবাড়ি যে সেখানে রাজাদের আমলে যে-সব হাতি-ঘোড়া সেপাই-শাস্ত্রী থাকত সেগুলোকে দূর থেকে মনে হতো যেন ছোটো পুতুল চলে বেড়াচ্ছে। দশ-বারো-হাত চাওড়া এক-একখানা পাথরের ইটে-গাথা বাড়ির দেওয়ালগুলো, এক-একটা থাম যেন এক-একটা তালগাছ ! সাততলা বাড়ি কিন্তু তার নিচের পাচতলা নিরেট দেওয়ালে ভরাট করা, তার মাঝে পাহাড়ের গহবরের মতো অন্ধকার একটি সিংগি দরজা, আশে-পাশে বাক্সর মতো চোরকুঠুরি। সেগুলোতে দেওয়ালই সব, থাকবার জায়গা অল্পই, তাও আবার এখানে-ওখানে লোহার গরাদ দিয়ে বন্ধ, কত কালের অন্ত্র-শস্ত্র, রাজাদের আসবাবপত্র, চাল-ডাল, ঘি-ময়দা, ধন-দৌলত দিয়ে ঠাসা । যেমন সোতা তেমনি অন্ধকার, সে-সব ঘরে একবার ঢুকলে রাস্ত হারিয়ে চিরকাল গোলকধাঁধার মতো ঘুরে বেড়াতে হয়, আর বাইরে আসবার ●●8