পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রিদয় বিষম ভয় পেয়ে এদিক-ওদিক ছুটোছুটি খোজাখুজি করতে লাগল। একে সন্ধ্যা হয়ে গেল, যেখানে পাখির ডাক শোনে সেইদিকেই রিদয় ছুটে যায়, ঝোপ-ঝাড় নেড়ে দেখে, নাম ধরে ডাক দেয়, এমনি সারারাত রিদয় ছুটোছুটি করতে লাগল অন্ধকারে জল কাদা ভেঙে ! নাটবাড়ির উঠোনটা পর্যন্ত রিদয় খুঁজে এল, কিন্তু সুবচনীর খোড়া হাস কোথাও নেই ! এদিকে সকাল হয়ে এল, চকা বললে –‘সে নিশ্চয়ই অন্য দলে মিশে এগিয়ে গেছে, আর মিছে খোজা, চলে আমরা বেরিয়ে পড়ি, সময় উৎরে যাচ্ছে ।" রিদয় ঘাড় নেড়ে বললে –‘তাকে না নিয়ে আমি এখান থেকে নড়ছিনে, তোমরা যেতে চাও যাও ।” চকা মুশকিলে পড়ল । রিদয় নড়তে চায় না, এদিকে সব হাসেরই দেশে যাবার টান বয়েছে, তবু খোড়ার জন্তে চকা আরো এক ঘণ্টা দেরি করলে, তাতেও যখন খোডার সন্ধান পাওয়া গেল না তখন তারা রিদয়কে একলা রেখে চট করে দেশ থেকে ঘুরে আসবার জন্য উত্তরমুখে উড়ে পড়ল –আসি-আসি বলতে-বলতে । . চকার দল চলে যেতে রিদয়ের চারদিকে যেন শূন্য বোধ হতে লাগল ! সে আস্তে-আস্তে নাটবাড়ির ভাঙা পাচিলটা আর একবার সন্ধান করতে চলেছে, এমন সময় দূর থেকে দেখলে খোড়া কিরাশ-কলমীর ডাটা মুখে নিয়ে খোড়াতে-খোড়াতে পালের গায়ে একরাশ ভাঙাচোর। পাথরের মধ্যে গিয়ে সেঁধোলে । এমনি খোড়াকে শেওলাগুলি নিয়ে সেখানটায় আনাগোনা করতে দেখে রিদয় লুকিয়ে-লুকিয়ে পাচিলে উঠে দেখলে –জড়োকরা পাথরের মধ্যে চমৎকার ছাই রঙের একটি বালিহাস শুয়ে আছে, খোড়া তার মুখে খাবার তুলে-তুলে দিচ্ছে আর দুজনে কথা হচ্ছে —‘আজ কেমন আছ ? তেমনিই ? ডানার ব্যথাটা যায়নি ? 'না, এখনো নাড়তে গেলে বুকটায় খেলনা করে।’ ‘মানুষগুলো কী নিষ্ঠুরণ ভাগ্যি গুলিটা বুকে লাগেনি।’ VHIV