পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুদি নিশ্বেস ফেলে বললে –‘হঃখের কথা কইব কী, এই সন্ধ্যেবেল সে আমার গলাটি ধরে বলে গেল –‘বুদি শুনেছিস এই নাটবাড়ির জলায় রাজা এবার ধান বোনবার হুকুম দিয়েছেন, এতকালে জমি সব আবাদ হবে ; আমাদেরও দুঃখু ঘুঢ়বে। আমি বললেম –‘মা, তোমার আর দুঃখু ঘুচবে কী, তোমার ছেলেপুলে কটাই বিদেশে গিয়ে সংসার ফেদে কাজ-কারবার করতে বসে গেল, বুড়ি মাকে তো তারা একটিবার মনেও করলে না। মা বললে – ‘বুদি লো বুদি, তাদের ভূষিসনে, ঘরের ভাত পেলে কি তারা আমাকে একলা ফেলে বিদেশ যায়, না পরের চাকরি করে ? এইবার তাদের চিঠি দেব দেখিস কেমন না তারা আসে । আমার মরবার সময় সব ছেলেরা এসে আমায় ঘিরে দাড়াবে আমি ডঙ্কা মেরে স্বর্গে চলে যাব এই সাধটি আমার কি পূর্ণ হবে বুদ ! এই বলে মা ঘরের মধ্যে চিঠি লিখতে গেল, গোয়াল-ঘরে আর জাবও দিতে এল না, পিন্ধুমও জ্বলিলে না ! সন্ধ্যেবেলা মাকে যেন কেমনকেমন দেখমু, তাই বলি একবার যাই দেখে আসি। ওমা, ঘরে উকি দিয়ে দেখি যেখানকার যেটি সব তেমনি গোছানো রয়েছে— পিছুমটি জলছে বিছানা পাতা রয়েছে কিন্তু মা আমার চিঠিটুকু হাতে নিয়ে আলুথালু হয়ে দরজার ধারে পড়ে রয়েছেন, ছেলেরা আসবে ছেলেরা আসবে করেই বুড়ি মলে গো ! আহ ! এই গয়ল বোয়ের দশা কি এমন ছিল। এই বাড়িতে দেখছি ছেলে মেয়ে চাকর-বাকর গিসগিস করছে -ঐ নাটবাড়ির সমস্ত জলাটা ওদের জমিতে পড়েছে, আজ এখনো কত জমি যে বেখবর পড়ে আছে তার ঠিক নেই। কর্তা যতদিন ছিলেন যেমন বোলবোলা তেমনি লক্ষির ছিরি । আহা, ওই গয়লা-বেী তখন তুবেলা সেজেগুজে পাঁচজন গয়লানী সঙ্গে গাই দোহাতে আসত, নূপুরের শব্দ শুনলে গাই-গরু সব চারদিক থেকে হামা দিয়ে ছুটে আসত গে। এমন লক্ষ্মী বেী কচি-কাচা নিয়ে বিধবা হল গো । তখন এক-একদিন সে আমার গলা ধরে কানত আর বলত —‘বুদি, oSo