পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোর দুধ খেয়ে মানুষ হল তোকে আমি কি ছাড়তে পারি ? আহা সেই আমার সেঙাতনী মনিবনী, গিন্নি মা-জননী আজ নিজেই চলে গেল গো, ওমা’ —বলে সে অঝোরে র্কাদতে লাগল । রিদয় অনেকক্ষণ চুপ করে থেকেই বললে –‘আহা বুদি, আমতলিতে মাকে আমি এমনি করে ফেলে এসেছি যে ' বুদি বলে উঠল —যাও কালই ফিরে যাও, না হলে হয়তে এই বুড়ির মতো ছেলে-ছেলে করে শেষে সেও মরবে। , তোমার তো এখনো গিয়ে মাকে দেখবার সময় আছে কিন্তু এই বুড়ির ছেলেরা কী পোড়াকপাল নিয়েই জন্মেছিল, কখনো দেশে এল না, মা মরে গেল তাকেও দেখতে পেলে না ? সকাল বেলায় মিউনিসিপালের মুর্দোফরাসগুলো এসে বুডিকে পোড়াতে নিয়ে গেল, খটাস চলে গেল দিগ্বিজয়ে, নেউল চলে গেল মৃগয়াতে, রিদয় বুড়ির ঘব থেকে তার ছেলেদের নামের চিঠিখানি ডাকে ফেলে দিয়ে বুদিকে মাঠে রেখে খোড়ার কাছে ফিরে চলল। পাতি-জলার কাছ বরাবর এসে রিদয় দেখলে খোড়া হাস সকালে উঠে জলের মাঝে একটা মাটির ঢিপিতে দাড়িয়ে ডানা ঝাড়ছে, বালি হাস তখনো ঝোপের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে। রিদয় সারারাত কিছু খায়নি, হাসের কাছে না গিয়ে সে বরাবর বুদিগাইটার পিছনেপিছনে জঙ্গলে গিয়ে ঢুকল। দু-একটা-পাত বাদামের চেষ্টায় রিদয় একটা শিরীষ গাছের উচুডালে কাঠবেড়ালিদের ঘরে ভিখ খে করতে চলেছে। মস্ত শিরীষ গাছ, তার সব উপরের ডালে কাঠবেড়ালিদের খোপ বসতি, ঝোপ বসতি। এমনি এপাড়াওপাড়ায় রিদয় জয়রাম’ বলে গান গেয়ে দাড়াচ্ছে আর কেউ এসে তাকে দুটো শুকনো ছোলা, কেউ একটা বাদাম, এমনি টুকি-টাকি ভিখখে দিচ্ছে। রামের দোহাই দিলে কাঠবেড়ালিদের ভিখ খে দিতেই হয়, কিন্তু এক-এক কাঠবেড়ালি গিল্পী ভারি কিপটে, রিদয়কে দূর থেকে দেখেই বলছে —‘ওগো ঘরে কিছু নেই, কর্তা e8२