পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কে জানে ভাই, ব্যাটাদের দেখলেই কেমন রাগ হয়ে যায় ; শোন তবে বলি আজ প্রায় ৬-৬৫ বছর হল, এই লাঠি যখন প্রথম কিনি, তখন যার নামে ঐ পাচিধোবানীর গলিটা হয়েছে সেটা বেঁচে আছে। ইয়া ল্যাজ মোট তার এক পোষা বেড়াল। ভোরে নতুন লাঠিটা হাতে তোমাদের এখান থেকে যাচ্ছি, দেখি বেড়ালটা অকাতরে ঘুমোচ্ছে দাওয়ায় পড়ে। নতুন কিনেছি লাঠিটা— মজবুদি তো পরখ করা চাই। দিলেম বসিয়ে বেড়ালটার ঘাড়ে। টু শব্দটি করতে হল না। আমিও চট, সরলেম নতুন বাজারের দিকে— তখন ঘোর ঘোর আছে। বাসায় গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে, বাজার থেকে নতুন এক তরকারী — যা কেউ খায়নি –কিনে রুমালে বেঁধে আসছি, গলির মোড় থেকে শুনি পাচি বাড়িওয়ালীর গলা— ‘কে কল্লে এমন ? তার সর্বনাশ হোক— গোল্লায় যাক যত গালাগাল তত কান্না। আমি বুঝলেম ভাই ব্যাপারটা যা হয়েছে। অতি ভাল মানুষ হয়ে বললেম— ‘বলি ও গিন্নি, হল কী ? কান্নাকাটি কেন ? —‘দেখনা বাবু কেন?—বলেই যা একটানা লম্বা গালাগাল, শুনলে কানে আঙ্গুল দিতে হয়। আমি কী আর বলি, বেড়ালটাকে একটা লাঠির খোচা দিতে সেটা দাত খিচিয়ে, পেট উচিয়ে কাৎ হয়ে পড়ল খানায়। আর কোথা আছে—বাড়িওয়ালীর কান্না । মাথা কুটে মরতে যায়। আমি সাধু হয়ে তার কাটা ঘায়ে তত মুনের ছিটে দিই— ‘তাই তো, এই বাজারে যেতে দেখে গেলেম, বেড়ালটি মোটা ল্যাজ ফঁাপিয়ে দেয়ালে গা ঘসছে —আহা কে এমন নিষ্ঠুর এর মধ্যে এর দফা রফা করলে ? বড়ে ভালো ছিল বেড়ালটি ! সকালে ওর মুখখানি দেখঙ্গে দিনটি ভালো যেত। কোলে পিঠে করে মানুষ করলে –ওর প্রমাই ফুরিয়েছিল ; তবু ভাল বলতে হবে যে তোমার ষষ্ঠির দাস ঠিক ষষ্ঠির দিনেই গেছে —‘এই বলেই আমি-চট চম্পট। 838