পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি এক একদিন তামাকের লোভে যেতেম ; বিশ্বেশ্বর অমনি সটু করে সর্টকার উপর থেকে কলকিট তুলে নিয়ে বলত চট্‌ জলদি টান দিয়ে সরো। মুখে খানিক গোলাপজল আর গুড়গুড় গন্ধ ভর্তি করে দে দৌড়, দোতলা থেকে বিশ্বেশ্বর বলে হাক কানে পৌঁছতে না পৌঁছতে। —তারপর ? • • •তারপর শোননা এক মজার কথা।–চায়ের দোকানে যেমন সকাল থেকে লোক ঢোকে আর বার হয়, তেমনি সস্তার তামাকখোররা বিশ্বেশ্বরের ভিণ্ডিখানায় আনগোনা করত। ওর মধ্যে একজন ছিলেন আমাদের মনিখুড়ে, তিনি এই গল্পটা করতেন ঃ বাবা, প্রথমটা তামাক ধরালে বিশ্বেশ্বর। তখন পয়সার নামগন্ধ করলেন । হরদম তার চালায় ঃ যখন দেখলে নেশা বেশ জমেছে, তার দোরে স্থবেলা হছিলুমের জন্যে ধরণা দেওয়া ছাড়া আমি অনন্ত গতি, তখন তুললে পয়সার কথা মহালয়ার ঠিক পূর্বদিন— দেখ বাবু উপরি পাওনা থেকে এতকাল তোমার তামাক জুগিয়েছি এবার পার্বনী থেকে তোমার কিছু জমা না দিলে তো চলবে না । আমি বলি,—দেখ বিশ্বেশ্বর, গরীব ব্রাহ্মণ আমাকে মেরে তোমার কী লাভালাভ ? —সে কী, আমি হলেম আপনাদের চাকর, হুকুম করেন আমি কালথেকে ভিণ্ডিখানার ফর্দতে আপনার নাম তুলে দিই। যোগেশ মামা দেখি ছছিলিম দশছিলিম যা বরাদ্দ করে দেন আমি দেব, আমার কী। তখন বেখরচায় যত পার সরকারি পয়সা পোড়াও মনের সাধে! আমার মাথায় তো বাবা বজ্রাঘাত হল—যোগেশ মামার ফর্দধর মানে কর্ণমর্দন, তদুপরি তামাকের আশা বিসর্জন ৷ কী করি –টালমাটাল করে সেদিনটা তো গেল। তারপরদিন ইকো টেনে কেশে মরি, নিছক দা’কাটা ঝেড়েছেন বিশ্বেশ্বর। বললেম—ও বিশ্বেশ্বর কাশ রোগ ধরবে নাকি । কড়া হয়েছে ? তা বেশ বৈকালে কিছু ভেলসা দেওয়া যাবে। 88s