পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গাছ বললে –“মহারাজ, এমন কাজ কর না। সেই চুলি আমার ডাল কেটেছে, আমি তাকে শাস্তি দেব। তুমি কাল সকালে তাকে আমার কাছে ধরে নিয়ে এস।” রাজা বললেন--"আমার কাটা কানের কথা প্রকাশ হল তার উপায় ? প্রজারা যে আমার রাজত্ব কেড়ে নেবে ? গাছ বললে –‘সে ভয় নেই, আমি-কাল তোমার কাটা কান ৷ জোড়া দেব। শুনে রাজা খুশি হয়ে রাজ্যে ফিরলেন। রাজা ফিরে আসতেই রাজার রানী, রাজার মন্ত্রী, রাজার যত প্রজা রাজাকে ঘিরে বললে –‘রাজামশাই তোমার কান দেখি । রাজা দেখালেন –এক কান কাটা । তখন কেউ বললে—‘ছি ছি', কেউ বললে—‘হায় হায়, কেউ বললে –‘এমন রাজার প্রজা হব না।’ তখন রাজা বললেন—"বাছার, কাল আমার কাটা-কান জোড়া যাবে, তোমরা এখন সেই চুলিকে বন্দী কর । কাল সকালে তাকে নিয়ে বনে যে অশখ গাছ আছে তারই তলায় যেও । রাজার কথা শুনে প্রজারা সেই চুলিকে বন্দী করবার জন্যে ছুটল। তার পরদিন সকালে রাজা মন্ত্রী নাপিত, রাজ্যের যত প্রজা আর । সেই চুলিকে নিয়ে ধুমধাম করে সেই অশথতলায় হাজির হলেন। রাজা বললেন ‘অশখ ঠাকুর, চুলির বিচার কর।’ অশখ ঠাকুর নাপিতকে বললেন-নাপিত, চুলির একটি কান কেটে রাজার কানে জুড়ে দাও । নাপিত চুলির একটি কান কেটে রাজার কানে জুড়ে দিলে। চারিদিকে ঢাক-ঢোল বেজে উঠল, রাজার কান জোড়া লেগে গেল। এমন সময় যে হুনুমান রাজার কান ছিড়েছিল সে এসে বললে—‘অশখ ঠাকুর, বিচার কর –রাজামশায় আমার কান কেটেছে, আমার কান চাই ।” অশখ বললেন –‘রাজা, ঢুলির অন্য কান কেটে হুমুকে দাও । এক কান কাটা থাকলে বেচারির বড়ো অসুবিধা হত• —দেশের বাইরে দিয়ে যেতে হত। এইবার ঢুলির ভূ-কান কাটা হল—সে এখন দেশের ভিতর দিয়ে যেতে পারবে।’ 86 &