পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলেই খাতাঞ্চিমশায় অগ্রসর হলেন । ইচ্ছাবড়ির গুণেই হোক বা চায়ের খোমারিতেই হোক, তেজে চললেম আমরা বালির ঢেউ ঠেলে জাহাজের পিছনে দুটো জালিবোট যেন । প্রায় ক্রোশখানিক পাড়ি দেবার পর আমি আর অবিন বসে পড়লেম । খাতাঞ্চিমশায় হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলেন সোজা । সকালে আকাশটায় তখন হালকা চা-পানির রং ধরেছে। মাথার উপর দিয়ে একটা চাতক পাখি চা চা করে ডেকে গেল। অবিন বললে –ইচ্ছাবড়ি তো খেলেম, কিন্তু ইস্চাময়ীর কিরূপ তো হল না। এক পেয়ালা করে চা যদি তিনি পাঠাতেন তো উপকার হত।’ বলতে-বলতেই এক মঙ্গোলিয়ান —ইরেন্দে পাগলা, উরেন্দে পাগলা —কষে বলে এক বাটি চা অবিনের হাতে দিয়েই অদৃশ্য হয়ে গেল –টিকিও দেখার সময় দিলে না। অবিন বাটি দেখে বললে –এ যে দেখি সোনার হল-করা পোস্ট আপিসের ডুম ! কিনারাতে আবার ফার্সিতে কী লেখা রয়েছে।’ আমি তখন উচ্চুপড়ি, আমার বিষ্ঠে পরীক্ষা করার জন্যে অবিন বললে –এ যে হাফেজি গজল, তাজা বেতাজা মনে হচ্ছে লেখা ? বলেই বাটিটা এক চুমুকে শেষ করে আমার হাতে দিয়ে বললে -- পড় তো কেমন পার ' 多 আমি বাটিতে চোখ বুলিয়েই বললেম – এ আর বুঝলে না, একটা রুবাই। এর মানে হচ্ছে— বাসি লুঙ্গি নাহি ছাড়ে, ধোয় হাত পা, ভাঙা পিড়া ফাট পাত্রে বসে খায় চা । নাপিতের ঘরে গিয়া হাজামত করে, থাকুক অন্তের কথা, ভাগনেও ভাত মারে। অবিন বলে উঠল—‘এঃ, আমরা খাতাঞ্চিমশায়ের ভাগনে –এর সবগুলোই যে আমি করি।’ 88obo