পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুও বললেন –‘ভাবছি এই কলসিটারে গাছের আগায় কেমনে নেওয়া যায় ? হেতি হোতি বললে –‘গলায় না ঝুলিয়ে কলসিটারে পিঠের পরে নেন । গাছের আগায় সহজে চড়ে যান।’ জ্ঞানকুণ্ডু খানিক হঁ। করে থেকে বললেন –‘অ্যা ! সৰ্বজ্ঞ জ্ঞানকুণ্ডু আমার নাম, আমার ঘটে এইটুকু বুদ্ধি যোগাল না। ধিক্– ' বলেই বুদ্ধির ঘট সেইখানেই ফেলে –‘গলায় দড়ি, গলায় দড়ি’ – বলতে বলতে দে-দৌড় জ্ঞানকুণ্ডু । হেতি হোর্তি কলসিট ভেঙে দেখলে তার মধ্যে মৌচাকের মতো একটা কী রয়েছে। তার খোপে-খোপে সুবুদ্ধি, কুবুদ্ধি, জ্ঞান, বিজ্ঞান, দুষ্টুবুদ্ধি, শিষ্টবুদ্ধি বিড়-বিড় করছে। দুই ভাই মৌচাকটি ভূ-ভাগ করে মুখে পুরে দিলে। একটু মিঠে, একটু তিতে, একটু ঝাল, একটু টক, একটু ঠাণ্ড, একটু গরম লাগল। বুদ্ধির চাক চিবিয়ে খেতেখেতেই দু-জনের বুদ্ধি বেড়ে বেড়ে তালগাছ । কোমর বেঁধে চলল তখন হেতি হোতি দুই ভাই ভবের হাটে ঘোল খেতে । বুদ্ধির চাক চিবিয়ে খেয়ে জগমুনশির বাড়ি ছাড়পত্র আনবার জন্য ভালতলা দিয়ে চলতে চলতে হেতি বলছে হোতিকে —‘ভাই মাথাট কেমন ভারি বোধ হচ্ছে না ? হোতি বলছে হেতিকে –বোধকরি বুদ্ধির ভাঃে ঘাড় ঝুকে পড়ছে। এই গাছতলে বসে নিই আয়। বুদ্ধি একটু পাকুক, তবে এগোনো যাবে জগমুনশির কাছারিতে।’ বোতলের মতো গোড়। মোটা গলা সরু একটা তালগাছ, তার গায়ে বুলু বেলাক একটা ফেলাগ –তার তলায় লেখা—জ্ঞানকুণ্ডু কালিকুণ্ডু এণ্ড কোং। হেতি হোতি ঘুরে-ঘারে দেখলে বাড়িতে ঢোকবার রাস্তা কোনো দিকে নেই। কী করে, “সেই গাছে ঠেস দিয়ে দু-জনে বুদ্ধি পাকাতে বসল-হেতি আকাশের দিকে চেয়ে হোতি মাটির দিকে চেয়ে, এমন সময শুনলে— ● ●●