পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হার জিত ( কথিকা) ছবিওয়াল কবিওয়াল আর খবরওয়ালা পুজোর সময় সেবার এলো রাচিতে। উত্তরের বারাণ্ডায় তিনে মিলে কথাবার্ত্ত চলে – ছবিতে কবিতায় এবং পলিটিকসের খবরে জড়াজড়ি। ছবি বলে – দেখ দেখ। ধান ক্ষেতে সবুজ লেগেছে, দূর পাহাড়ে নীল আভা, আকাশে আলোর খেলা —তার মাঝে ঐ কালে মেয়ে । কবি বলেন –তুমি দেখ, আমি শুনি –বাতাস বলে যাই যাই, মেঘ বলে আসি আসি । ছবি বলে, দেখ দেখ জল চলে, ফুলে চলে, বেঁকে চলে। কবি বলে, শোনো শোনো –পাখি কি বলে, মাঠে ঘাটে বঁাশী বাজে । ছবি বলে –কী মুন্দর কালো ঐ মেয়েটি ! কবি বলে নীল আকাশ কী মিঠে সুরই দিচ্ছে । খবরের কাগজ থেকে চোখ উঠিয়ে খবরী বলে –ওহে পড়ে দেখ খবরট ! কবি আর ছবির চমক ভেঙে যায়। খবর পড়ে চলেন বিশ্বের খবর, তর্কের ঝড় ওঠে চায়ের পেয়ালার উপর। বাইরের রোদ বারাণ্ডায় কখন আসে, কাছে বসে তর্ক শুনে চলে যায় আপন কাজে । ছবি থেকে যায় আধ-লেখা, কবিতা থাকে অসমাপ্ত, তর্কও শেষ হয় না। বারোটা বাজে ভাত খেতে । g দুপুর বেলা একটি ঘরে বসে দেখি রোদে পোড়া মাঠে কালো মেয়ে ক্ষেতে ক্ষেতে কাজ করে চলেছে। ওঘরে শুনি কবি গুণ গুণ, করে গাইছে। আর, আর খবরী ? সে খাটিয়ায় পড়ে নাক ডাকাচ্ছে। খবর বিশ্বের খবর হজম করতে চায়, তাই তার ঘুমোন চাই। আর কবি ছবি এর ঐ মাঠ ঘাটটুকুর মধ্যে যেটুকু খবর আসা যাওয়া করছে টুকরো টুকরোভাবে,তাকেই ধরে রাখতে জেগে বসে আছে। আর ঐ কালো মেয়েট —সে কী অর্জন করছে সব তুচ্ছ ক্ষণিকের জিনিস সারাদিন খেটে খেটে তাই ভাবছে ছবি আর কবি। 66 e