পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৬৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা বলে ব্রাহ্মণ করি নিবেদন । শৈবা তোমার কেন দাসী লব কি কারণ । ব্রাহ্মণ চটেই লাল –‘আরে তোমার নারী তুমি নেবে না আমি কি চিরকাল ভাত-কাপড়ে রানীর হালে ওঁকে সোনার থালে পঞ্চাশ ব্যঞ্জন খাইয়ে ফতুর হব ? রাজা বললেন –“বাপরে ব্রাহ্মণের কেনা বলতে ব্রহ্মস্ব । রাজা হয়ে তা নিয়ে শেষে কি নরকে যাব ? শৈব্যা চান রাজার দিকে, ব্রাহ্মণ চান ব্রাহ্মণীর দিকে —বলি ও ব্রাহ্মণী, এ তো ভাল বিপদ হল –এ যে ফিরে নিতে চায় না।’ —‘ফিরে না নিতে চায় হাটে নিয়ে বিক্রি করে ফেল। তুমিও বঁাচ আমিও বাচি —সেই টাকায় পাঁচখানা গহনা পাব।’ এই বলে ব্রাহ্মণী রুহিদাসের দিকে ফিরে ফিরে চায় –সাত রাজার ধন মানিকে গড়া দুখানি কঙ্কণ তাই নিয়ে খেলছে ছেলে । শৈব্যা বললেন –‘বাছ এরা আমাকে হাটে বেচতে চায়।’ ব্রাহ্মণী তাড়াতাড়ি বলেন –তোমার মাকে তুমি কিনে নিতে পার তো আমাদের আর হাটে যেতে হয় না।’ —‘কী দিয়ে কিনব ? আমার তো পয়সা নেই। এই দুটে৷ পিতলের বালা আছে, এই নিয়ে আমার মাকে ছেড়ে দাও।” —‘নক্ষি ছেলে, চাদ আমার, সোনা আমার’ বলে বালা ছুগাছি খুটে বেঁধে ব্রাহ্মণী বললে –‘যাও বাছা এখন বাপ মায়ের সঙ্গে ঘরে যাও —আমরা চললেম আপন ঘরে ? রাজা বললেন —“আমাদের তো ঘর নেই –যাব কোথা ? ব্রাহ্মণ বললেন – সে কী হয়, এখানে অযোধ্যার রাজাদের ধর্মশালা মঠবাড়ি রযেছে, তার অধ্যক্ষ হচ্ছি আমি। রাজভোগে থাকবে সেখানে একটি পয়সা খরচ লাগবে না –চল আমি ছাড়চনে । রাজা বললেন –‘সে হয় না, আজ আগে আমার মানব-বাড়ি যাব, তার পরে দরকার হয় তো মঠ-বাড়িতে উঠব।’ ૭૨: