পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর খেয়াল ? সোনালি, একটি কথা বলব, কিন্তু বলে সে কথা প্রকাশ করবে না, আমার শক্র হাসাবে না? সোনালি, তুমি আমাকে যাই চাব-না কেন, আমি জানি এই স্বর্গে মর্ত্যে আলো দেবার ভার নেবার উপযুক্ত পাত্র আমি নই, এত পাখি থাকতে অতি তুচ্ছ সামান্ত পাখি আমার উপর অন্ধকারকে দূর করবার ভার পড়ল ? কত ছোটো, কত ছোটো আমি, আর এই জগৎজোড়া সকালের আলো সে কী আশ্চর্য-রকম বড়ো, কী অপার তার বিস্তার। প্রতিদিন সকালে আলো বিলিয়ে যখন দাড়াই তখন মনে হয়, একেবারে ফকির হয়ে গেছি। আমি যে আবার কোনোদিন এতটুকুও আলো দিতে পারব তার আশাটুকুও থাকে না ’ সোনালি শুনলে যেন কুঁকড়োর কথা চোখের জলে ভিজে ভিজে, সে র্তার খুব কাছে গিয়ে বললে, ‘মরি মরি। কুঁকড়ে সোনালির মুখ চেয়ে বললেন, আঃ সোনালি, যে আশানিরাশার মধ্যে আমার বুক নিয়ত তুলছে তার যে কী জ্বালা কেমন করে বলি। গান গাইতে হবে, আলোও জালাতে হবে, কিন্তু কাল যখন আবার এইখানে দাড়িয়ে দশ আঙুলে আশার রাগিণী খুঁজে খুজে কেবলই মাটির বুকের তারে তারে টান দিতে থাকব, তখন হারানো সুর কি আবার ফিরে পাব, না দেখব, গান নেই গলা নেই আলো নেই তুমি নেই আমি নেই কিছু নেই ? হারাই কি পাই, এরি বেদন মোচড় দিচ্ছে বুকের শিরে শিরে সোনালি। এই যে দো-টানায় মন আমার তুলছে এর যন্ত্রণা কে বুঝবে। রাজহাস যখন রসাতলের দিকে গলাটি ডুবিয়ে দেয়, সে নিশ্চয় জানে, পদ্মের নাল তার জন্তে ঠিক করা রয়েছে জলের নিচে, বাজপাখি যখন মেঘের উপর থেকে আপনাকে ছুড়ে ফেলে মাটির দিকে তখন সেও জানে ঠিক গিয়ে সে যেটা চায় সেই শিকারের উপরেই পড়বে, আর সোনালি তুমিও জান বনের মধ্যে উই পোকা আর পিপড়ের বাসার সন্ধান পেতে তোমায় এতটুকুও ভাবতে হয় না, কিন্তু আমার এ কী বিষম ডাক দেওয়া কাজ। কাল যে কী হবে সেই দুঃস্বপ্নই বয়ে বেড়াচ্ছি, মাজকের ডাক আজকের সাড়া কাল আবার দেবে Qや