পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘মহারাজ, আমার ভাল ভাইদের জন্তে ঘোড়া আনিয়ে দিন । তারপর, বালিয় ও দেবকে ঘোড়ায় চড়িয়ে বাপ্পা সেই কালো ঘোড়ায় উঠে বসলেন— সমস্ত সৈন্যসামন্ত ও সেনাপতির মাথার উপর বাপ্পার প্রকাণ্ড শরীর, সমুদ্রের মাঝে পাহাড়ের মতে, প্রায় আধখানা জেগে রইল ; তখন রাস্তার লোক দেখে বলতে লাগল— ‘হঁ্যা বীর বটে ; যেমন চেহারা, তেমনি শরীর ? চারিদিকে ধন্য-ধন্য পড়ে গেল ; কেবল রাজার যত সেনাপতি মাথার উপরে রাজবেশ মোড়া সেই ভিখারীকে দেখে মান-রাজার উপর মনে-মনে অসন্তুষ্ট হলেন । রাজা দিন-দিন বাপ্পাকে যতই সুনয়নে দেখতে লাগলেন, যতই তাকে আদর অভ্যর্থনা করতে লাগলেন, ততই সেনাপতিদের মন হিংসার আগুনে পুড়তে লাগল। ক্রমে মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধের দিন উপস্থিত হল। সেইদিন রাজসভায দেশ-বিদেশের যত সামন্ত-রাজা, যত বুড়ো-বুড়ে সেনাপতি একমত হয়ে মান-রাজার সম্মুখে দাড়িয়ে বললেন– মহারাজ, আমরা অনেক সময় অনেক যুদ্ধে তোমার জন্য প্রাণ দিতে গিয়েছি, সে কেবল তুমি আমাদের ভালোবাসতে বলে, আমাদের বিশ্বাস করতে বলে ; যদি মহারাজ, আজ তুমি সেই ভালোবাসা ভূলে একজন পথের ভিখারীকে আমাদেব সকলেব উপরে বসালে, বাপ্পা আজ যদি তোমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়, সকলের চেয়ে বিশ্বাসী হল—তবে আমাদের আর কাজ কী ? বাপ্পাকেই এই মুসলমান যুদ্ধে সেনাপতি কর ; আমাদের বীরত্ব তো অনেকবার দেখা আছে, এবার নতুন সেনাপতি কেমন করে যুদ্ধ কবেন দেখা যাক ! মহারাজ মান চিরবিশ্বাসী রাজভক্ত সর্দারদের মুখে হঠাৎ এই নিষ্ঠুর কথা শুনে বজাহতের মতো স্তব্ধ হয়ে বসে রইলেন, তারু আর কথা বলবার শক্তি থাকল না। তখন সেই প্রকাণ্ড রাজসভায় এই বিদ্রোহী সর্দারদের মধ্যস্থলে পনেরো বৎসরের বীর-বালক বাপ্পাদিত্য উঠে দাড়িয়ে বললেন, “শুনুন মহারাজ ! আজ রাজস্থানের প্রধান-প্রধান সর্দারেরা রাজসভায় দাড়িয়ে বলেছেন—এ ঘোর বিপদের সময় বাপ্পাই এবার Ե Եր