পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভীমকে বন্দী করে নিয়ে গেলেন। কুড়িজনের মধ্যে পাচজনমাত্র রাজপুত চিতোরে ফিরল। প্রতিপদের সকালবেলায় সমস্ত চিতোরে রাষ্ট্র হল— ভীমসিংহ বন্দী হয়েছেন ; পদ্মিনীকে না দিয়ে তার মুক্তি নেই। আল্লাউদ্দীন যখন শিবিরে পৌছলেন, তখন রাত্রি আড়াই প্রহর। তিনি ভীমসিংহকে সাবধানে বন্ধ রাখতে হুকুম দিয়ে নিজের কানাতে বিশ্রাম করতে গেলেন। আজ তার দৃঢ় বিশ্বাস হল যে, রানা যখন ধরা পড়েছেন, তখন পদ্মিনী আর কোথায় যায় ! হিন্দুর মেয়ে স্বামীর জন্যে প্রাণ দিতে পারে, বাদশার বেগম হতে কি রাজী হবে না ? - পদ্মিনীকে না পেলে রানাকে কিছুতেই ছাড়া হবে না ! —আল্লাউদ্দীন মনে-মনে এই প্রতিজ্ঞা করে সোনার খাটিয়ায় তুধের ফেনার মতো ধপধপে বিছানায় শুয়ে হিন্দুরানী পদ্মিনীর কথা ভাবতে-ভাবতে শেষ রাত্রে ঘুমিয়ে পড়লেন। সকাল হলে বাদশা মনে ভাবলেন, এইবার পদ্মিনী আসছেন। সকাল গিয়ে দুপুর কেটে সন্ধ্যা হল, পদ্মিনী এলেন না। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত চলে গেল, তবু পদ্মিনীর দেখা নেই। বাদশ অস্থির হয়ে উঠলেন । র্তার মনে হতে লাগল এ-ভীমসিংহ কি আসল ভীমসিংহ নয় ? আমি কি ভুল করে সামান্ত কোনো সর্দারকে বন্দী করে এনেছি ? আল্লাউদ্দীন বন্দী রানাকে হুজুরে হাজির করতে হুকুম দিলেন। লোহার শিকলে বাধা রানা ভীম বাধা-সিংহের মতো বাদশার দরবারে উপস্থিত হলেন । শাহেনশা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমিই কি পদ্মিনীর ভীমসিংহ ? রানা উত্তর করলেন, ‘পাঠান ! এতে তোমার সন্দেহ হচ্ছে কেন ? আল্লাউদ্দীন বললেন, যদি তুমি সত্যই ভীমসিংহ তবে তোমাকে উদ্ধার করবার জন্য - রাজপুতদের কোনোই চেষ্টা দেখছি না যে ? রানা বললেন, যে মুখ নিজের বুদ্ধির দোষে মিথ্যাবাদী পাঠানের হাতে বন্দী হয়েছে, তার সঙ্গে চিতোরের মহারান বোধ হয় আর কোনো সম্বন্ধ রাখতে চান না ? কথাটা শুনে বাদশার মনে খটকা লাগল— যদি, সত্যই ভীমসিংহকে পাঠানের }} •