পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পেশ করলেন, কিন্তু হুজুর তে পড়তে জানেন কত— কলম হাতে হাম্বিরের দিকে চাইলেন । হাম্বির বললেন, “এ সব পাকা দলিলে কলমের সই দেওয়া ভালো নয়। আমি বলি মহারাজ এতে পাঞ্জা মোহর করে দিলেই ভালে| হয় ? মুঞ্জবাহাদুর দুই হাতে কালি মেখে দলিলের দুই পিঠে হাতের ছাপ লাগালেন। সেনাপতি দলিল নিয়ে বিদায় হলেন। মুঞ্জবাহাদুর হাম্বিরের দিকে চেয়ে হাসতে-হাসতে বললেন, "এ তো বড়ো মজা । লড়াই নেই, হাঙ্গামা নেই, এক হাতের ছাপেই কাজ সাফ ? দিল্লীর বাদশাকে এমনি একটা পাঞ্জা পাঠিয়ে চিতোরের কেল্লাটা দখল নিলে হয় না ? হাম্বির বললেন, ‘আগে মেবার দখল করে নেওয়া যাক, তারপর দিল্লী পর্যন্ত ঠেলে যাওয়া যাবে। এখন একটু আমোদ-আহ্নাদের হুকুম হোক । র, র সেনাপতি আমাদের জাক-জমকটা দেখে যাক ৷” মুঞ্জ রাজা বললেন, ‘বন্ধু, তুমি যেমন বোঝে কর, কিন্তু দেখে, মাদলের বাজনা আর মন্তয়ার কলসীটা ভুলো না । এ দুটাে না থাকলে আমোদ হবে না।’ হাম্বির ভারে-ভারে মহুয়ার কলসী দলে-দলে মাদলের ব্যবস্থা করলেন । উজলাগ্রামে ভীল-রাজার রাজপ্রসাদে আমোদের ফোয়ার খুলে গেল। সেনাপতি এলেন, গম্ভীরমল এলেন, চুয়োমল এলেন, হাম্বির এলেন, গ্রামের প্রজালোক পাড়া-প্রতিবাসী যে খোনে ছিল সকলে এল । তার সেই সঙ্গে এল শাদা কাপড়ে ভদ্রলোক সেজে একদল রাজপুত সৈন্ত ! রাত্রি প্রায় শেষ হয়েছে, গ্রামবাসীরা যে-যার ঘরে ফিরেছে ; ভীলের দল মহুয়ার কলসী খালি করে যেখানে-সেখানে গড়াগড়ি যাচ্ছে, সেই সময় হাম্বির তার বেতো ঘোড়ার পিঠে একটা রক্তমাখা চটের থলি চাপিয়ে উজলাগ্রাম থেকে বিদায় হলেন । সেনাপতির উপর ভীল-রাজার রাজপ্রাসাদ জালিয়ে দেবার হুকুম রইল। )8○