পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জানো ? শুধু মুঞ্জ ডাকাতের হাত থেকে চিতোরের রাজমুকুট কিংবা পাঠান ফৌজের কাছ থেকে চিতোর গড়টা কেড়ে নিলে বাপ্পারাওর সিংহাসনে বসা যায় না! ভবানী মায়ের হাতের খাড়াখানি যতদিন না সন্ধান করে পাওয়া যায় ততদিন তো রাজা হওয়া যাবে না । আগে সেই খাড়াখানির পুজো দিয়ে তবে রাজসিংহাসনে বসা চাই। সে খাড়া যে এখন কোথায়, তা কেউ জানে না । কেউ বলে পাঠানের লুটে নিয়ে গেছে, কেউ বলে রানী পদ্মিনীর সঙ্গে সে খাড়া চিতার আগুনে ছাই হয়ে গেছে।’ লছমীরানী বললেন, “আমি এ দুটো কথার একটাও বিশ্বাস করিনে। লোকে যাই বলুক, আমার বিশ্বাস ভবানীর খাড়া এখনো চিতোরেই আছে ; কেবল চিতোরে এমন কেউ কাজের লোক নেই যে সেই খাড়াখানি যত্ন করে সন্ধান করে। লোকেরই বা দোষ দিই কেন ? চিতোরের যে রাজা তারই যখন কোনো চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না লখন সামান্ত লোকের এত কী গরজ যে খাড়াখানা সন্ধান করে তাদের রাজার হাতে তুলে দেয় ? সেই দিন হাম্বির মায়ের পায়ে হাত দিয়ে শপথ করলেন, ভবানীর খাড়া উদ্ধার করে তবে অন্য কাজ ? 漫 সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, আকাশে মেঘ করে একটু-একটু বৃষ্টি পড়ছে ; হাম্বির ও কমলকুমারী দুজনে লুকিয়ে চিতোরের কেল্লায় এসেছেন। গ্রামবাসী চাষা-চাষীর সাজে কমলকুমারী পথ দেখিয়ে যাচ্ছেন আর হাম্বির তার সঙ্গে গায়ে একখান| মোটা কম্বল জড়িয়ে মস্ত পাগড়িতে মুখের আধখানা ঢেকে গুটি-গুটি চলেছেন বরাবর যেদিকে শ্মশান সেই দিকে। আকাশ দিয়ে কালো-কালে মেঘ হু-হু করে পুর্ব থেকে পশ্চিমে ছুটে চলেছে । ঝড়ের তাড়ায় বড়ো-বড়ো গাছের ডালগুলো মচমচ করে শব্দ করছে। চারিদিকে ঘোর অন্ধকার, কেউ কোথাও নেই, বাতাস এমন ঠাণ্ড যে গায়ে লাগলে গা কাটা দিয়ে ওঠে। এই অমাবস্তার রাত্রে ঝড়ে জলে ঘোর অন্ধকারে কমলকুমারী হাম্বিরকে নিয়ে মহাশ্মশানের ভিতরে এসে উ স্থিত হলেন । চোখে কিছু দেখা Ꮌ © Ꮌ