পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলছেন, বা, বেশ তো, এটা বুঝি তোমার রাজা এই বুড়ে বয়সে আমার খেলার জন্যে পাঠিয়েছেন ? দূতের বলা উচিত ছিল— আঙ্গে না, এটি রাজকুমার চণ্ডের জন্যে কেননা তারই সঙ্গে আমাদের রাজকুমারীর বিয়ের কথা নিয়ে এসেছি, আপনার মতো পাকা দাড়ির খেলার জিনিস এটি নয়—কিন্তু রানার ভাবগতিক দেখে দূতের মুখে আর কথা সরছে না। এদিকে সভাম্বুদ্ধ লোক মুখ টিপে হাসছে, ওদিকে লজ্জায় রাজকুমার চণ্ডের মুখ রাঙা হয়ে উঠেছে। দূত তখন বিষম সমস্যায় পড়ে বলছেন, মহারান, বড়ো সুখের কথা যে আপনি নিজেই আমাদের রাজকুমারীকে চাইলেন, আমাদের দেশের রাজা গরীব, তার এতদূর সাহস কেমন করে হবে যে বিয়ের সম্বন্ধ করে মহারানাকে নারকেল পাঠাবেন ? তিনি চেয়েছিলেন রাজকুমারকে জামাই করতে, কিন্তু কী আশ্চর্য, তিনি স্বপ্নেও যা আশা করেননি তাই ঘটল ! মহারানার যদি হুকুম হয় তবে আমি আমার রাজাকে গিয়ে এই সুখের খবর এখন পাঠিয়ে দিই’— বলেই দূত উঠতে যান— রানা তখন কী জবাব দেন, তাড়াতাড়ি দূতের হাত ধরে বললেন, ‘বোসো, আমি তামাশা করছিলাম, ডাক কুমার বাহাদুরকে’— কুমার তখন সভা ছেড়ে উঠে গেছেন। রানার দূত চণ্ডের কাছে ছুটল কিন্তু চণ্ড বলে পাঠালেন– মহারানা তামাশা করেও যে রাজকুমারীকে বিয়ে করতে চেয়েছেন তিনি আজ থেকে তামার মায়ের তুল্য, আমি কিছুতেই র্তাকে বিয়ে করব না । বুড়ে রানা বড়ো বিপদেই পড়লেন ! কী আশ্চর্য, ছেলেটা তামাশা বোঝে না ! লোকের পর লোক রাজকুমারকে বোঝাতে ছুটল কিন্তু চণ্ডের প্রতিজ্ঞা অটল। রান নিজের কথার ফদে নিজেই বাধা পড়লেন । এবাবের তামাশা যে জাতুকরের আমগাছের মতো দেখতে-দেখতে এমন সত্যি হয়ে উঠবে এটা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি ; বিয়ে করতে দুঃখ wনই কিন্তু তামাশাটা যে দূতকে ছেড়ে উলটে র্তাকে নিয়েই শুরু হল এইটেতেই তার তাপত্তি । ১৫৬