পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন্ধ্যাবেল একটা ঘরে নিজের মতো মোটা একটা গের্দ। ঠেস দিয়ে একরাশ মোহর গুনে-গুনে চটের থলিতে ভরে-ভরে রাখছেন ঠিক বড়োবাজারের মাড়োয়ারী এক-একটা মহাজনের মতে, সেইখানে আস্তে আস্তে এসে উপস্থিত হল । দাইকে হঠাৎ আসতে দেখে বুড়ো মোহরগুলো দুই থাবায় কোলের কাছে টেনে নিয়ে বললেন, তবে – তবে অসময়ে কী মনে করে ? g আজ্ঞে একটু সামান্য কাজ ছিল, যদি এখন ব্যস্ত থাকেন তো পরে আসব ? রণমল্ল দাইকে ভয় করতেন, ঠিক দপ্তরখানার দপ্তরি যেমন তার মনিবকে ভয় করে। রাজ্যের সবাই রণমল্লের ভয়ে সারা কিন্তু রণমল্ল র্কাপেন দাইয়ের ভয়ে ; তাই তিনি তাড়াতাড়ি দাইকে বললেন, ‘না না, আগে তোমার কাজটাই সেরে নিই।” দাই তখন বললে, ‘আঙ্গে, মকলজীর একটু ফরমাস আছে, তার কবুতর পালবার শখ হয়েছে, তাই হুজুরের কাছে দরবার করতে এসেছি ? মকুলজী পায়রা ওড়াবেন, বলেই বুড়ো হোঃ-হোঃ করে খানিক হেসে বললেন – ‘তা ভালো, এ সব শখ ভালে। — পায়রা ওড়ান, ছাগল পালুন, এতে আমার আপত্তি নেই ; ঘোড়া চড়া, তলোয়ার খেলা এগুলো ছাড়লেই বাচি, রাজার ছেলে ও-সব কেন ? খান দান ঘুড়ি ওড়ান, সুখে থাকুন আর’—দাই বলে উঠল – ‘আর রাজার ছেলের দাদামশায় বুড়ে মাড়োয়ারী সিংহাসনে বসে কেবল মোহরের তোড়া বঁধুন ? ঠিক বলেছ দাই, আমি তোমার উপর খুশি আছি ; মকলকে তুমি এরকম পায়রা আর ঘুড়ি দিয়ে ভুলিয়ে রাখ আর দুটো বছর, তারপর দেখা যাবে সিংহাসন আমার কাছ থেকে কেমন করে এরা কেড়ে নেয় ! এই নাও — বলেই একটা মোহর বুড়ে অনেক কষ্টে থলি থেকে বের করে দাইয়ের হাতে দিতে গেলেন । দাই হাত জোড় করে বলল, “আপনার মোহর আপনার ১৬৩