পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুজব রটতে লাগল। কেউ বললে, তাদের অনেক টাকা; কেল্লার মধ্যে তারা সেই সব ধন-দৌলত এনে পুতে রেখেছে ; রোজ তিনটে রাতে পাহাড়ের একটা দিকে কে যেন লণ্ঠন নিয়ে উঠছে সে স্বচক্ষে দেখেছে। কেউ বললে, দুই সর্দার কেল্লার মধ্যেকার একটা সুড়ঙ্গ দিয়ে দিল্লী যাওয়া-আসা করে, নবাবও মাঝে-মাঝে কেল্লায় এসে নাচতামাশা খাওয়া-দাওয়া করেন, তার ভাই একদিন হাট সেরে ফেরবার সময় সারঙ্গীর আওয়াজ আর মেয়েমানুষের গান স্পষ্ট শুনেছিল । একজন কামার কবে কেল্লায় দু-একটা মর্চে-ধরা দরজার খিল মেরামত করে এসেছিল, সে বললে, স্বচক্ষে দেখে এসেছে দুই বুড়োতে একটা আগুনের উপরে লোহার কড়া চাপিয়ে মুঠো-মুঠো লোহা-চুর ফেলছে, আর সেগুলো সোনা হয়ে উথলে পড়ছে। কড়াখানা কিন্তু মানুষের টাটকা রক্তে ভরা ; ফুটে। কালে বাঘ সেই কড়াখানার চারিদিকে কেবল মাটি শুকে-শুকে ঘুরছে। রাতকোটের কেল্লা ক্রমে নানা আজগুবি ভয়ংকর কাণ্ডের, ভয়ের আর তরাসের জায়গা বলে রটে গেল। ভয়ে সেদিক দিয়ে লোক আনাগোনাই আব করত না, দিনে-দুপুরে যেন তারা বাঘের গর্জন শুনতে থাকল, আর সন্ধ্যার সময় দেখতে লাগল— যেন কারা ঘোড়ার পিঠে থলে বোঝাই টাকা নিয়ে চলেছে— ঝম-ঝম । দুই সর্দার মাসে-তুমাসে একবার হাটে নেমে আসতেন, কাপড়চোপড় আটা গম একটা খোড়া ঘোড়ার পিঠে বোঝাই দিয়ে আবার পাহাড়ের উপর কেল্লায় উঠে যেতেন । কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে সারগ্রাম হগুখিানেক ধরে সরগরম থাকত। সে নানা কথা— আটাওয়াল দুই বুড়োকে আট বেচে টাকার বদলে মোহর পেয়েছে। ঘি দশ সের, তার দাম কতই বা ? বুড়োদের ঘি বেচার পরদিনই গোয়ালার স্ত্রীর গলায় হঠাৎ রুপোর হাস্থলিট দেখা যায় কেন ? আর সেই কাপড়ের মহাজন, তার দোকান থেকে দুটো বুড়ে কেন যে এত শাড়ি কেনে, সেটা প্রকাশ হয়েও হচ্ছে না, সে কেবল মহাজনটা রীতিমতো কিছু মেরেছে বলে ! 為bペ