পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দ শুনে শিকারী কুকুরের চোখ ছটাে জলছে। কুকুর সজাগ হয়ে বসে আছে। কিন্তু যারা পাহাড়ে উঠছে, তারাও কম সজাগ নেই— পাকা শিকারী পাকা যোদ্ধা রান কুম্ভ, তার চারণ, আর মাড়োয়ারের যোধরাও ! জানোয়ারের চোখ জ্বলছে কোন ঝোপের আড়ালে, সেটা এরা জোনাকির আলো বলে ভুল করলে না। রানার হাতের ছুরি সা-করে গিয়ে বিধল হিজুলিয়ার বিশ্বাসী প্রাণটি ধুকধুক করছে ঠিক যেখানে ! শিকারীর ছুরিতে কেল্লার একটি মাত্র রক্ষক, দুটি বুড়ো একটি কচি মেয়ের একমাত্র বন্ধু আর বিপদের সহায়— সেই সিংহের মতো হিঙ্গুলিয়া মরল— একটিবার কাতর স্বরে ডাক দিয়ে। সে যেন বলে গেল— ‘সাবধান। ঝড়ের বাতাসে সেই শেষ-ডাক ছেড়ে দিয়ে কুকুর স্তব্ধ হল! রানার বড়ো ফুর্তি হয়েছিল যে তিনি কেল্লা নেবার মুখেই একটা মস্ত সিংহ শিকার করলেন। সঙ্গীরাও বললেন, ‘রানা, এ বড়ো সুলক্ষণ | কিন্তু সেই ডাক যখন অন্ধকার চিরে পাহাড়ের চুড়োয় কেল্লার দিকে একটা কান্নার মতো ছুটে গেল, তখন সবার মুখ চুন হয়ে গেল। দেখলেন একটা কুকুর পড়ে আছে। তিনজন আস্তে-আস্তে আবার চললেন । মনে কারু আর তেমন উৎসাহ রইল না। ওদিকে সেই আঁধার ঘরের একটি পিদিম বাতাসে নিবু-নিবু করছে ; তাকেই ঘিরে তিনটি প্রাণী। বুড়ে চাচা গল্প বলছেন , র্তার ছোটো ভাই আর এক বুড়ে ছেড়া কাথায় বসে ঝিমচ্ছেন, আর একটি মেয়ে অবাক হয়ে শুনছে: "আমরা দুই ভাই তখন খুব ছোটো। আমি চলতে শিখেছি আর ও তখন মায়ের কোলে-কোলেই ফেরে। ম। আমার হাত ধরে চললেন – এতটুকু ওকে বুকে কবে । গায়ের সবাই বলতে লাগল, তুই কাঠুরের মেয়ে, কবে রানা ক্ষেতসিং তোকে বিয়ে করেছেন, তা কি তার মনে আছে ? মিছে চিতোর যাওয়া ! মা ঘাড় নাড়লেন ; তারপর আমরা ঘর ছেড়ে বার হলেম । আমাদের সেই ছোটো ঘরখানি, সেই সবুজ মাঠের ধারে সেই মস্ত তেঁতুলতলার দিকে চেয়ে আমার মনটা কেমন-কেমন করতে থাকল। আমি ծեrՏ,