পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংগ্রামসিংহ রান কুম্ভ অনেক লড়াই করেছিলেন, অনেক দেশও জয় করে বীরত্ব দেখিয়েছিলেন, কিন্তু ঝুনঝুনের লড়াই যেমন, তেমন আর কোনো লড়াই হল না। আর লড়াই ফতে হবার পর নাচ-তামাশা, গান-বাজনা, আতসবাজি, আলো যেমন হতে হয় ! একমাস ধরে চিতোর শহর রাতে দিন হয়ে গেল। কিন্তু একটি কাণ্ড ঘটল । লড়াই জিতে আসবার পরদিন থেকে কুম্ভ হাতের তলোয়ার তিনবার মাথার উপর ঘুরিয়ে ফারসি না আরবিতে কী জানি কী সাপের মন্তর না ব্যাঙের মন্তর আউড়ে তবে নিজের সিংহাসনে বসতে লাগলেন। শুধু এক-আধ দিন নয়, এই কাণ্ড বরাবর চলল। রানা বুড়িয়ে গেলেন তবু তলোয়ার ঘোরানো আর মন্তর পড়া একটি দিন কামাই গেল না। রানার কাণ্ড দেখে সভাযুদ্ধ অবাক হয়ে যেত, কিন্তু কেন যে রানা এমন করেন সে কথা জানতে কেউ চেষ্টাও করত না । একবার রানার বড়ো ছেলে সভার মাঝে রানাকে শুধিয়েছিলেন — মাথার উপরে তিনবার তলোয়ারখানা ঘোরাবার কারণটা কী, আর ওই সাপের মন্তরগুলোরই বা মানে কী ? সেইদিন রানা কুম্ভ জবাব দিলেন, ‘বারো ঘণ্টার মধ্যে চিতোর ছেড়ে চলে যাও, বাপ কী করেন, সে খোজ ছেলের রাখবার কিংবা জানবার দরকার নেই।’ তারপর তিনবার করে ঠিক নিয়মিত রানার তলোয়ার মাথার উপরে ফিরতে লাগল কিন্তু হুকুম আর ফিরল না। রানার বড়ো-ছেলে রায়মল নির্বাসনে গেলেন, রইলেন কেবল ছোটে-ছেলে সুরজমল আর মেজ-ছেলে— তার নাম রাজস্থানে কেউ এখনো করে না— ‘ঘাতীরাও’ ‘হাতিয়ারো এমনি নানা নামে সে লোকটাকে ডাকে । এই “ঘাতীরাও বিষ খাইয়ে বুড়ো রান কুম্ভকে মেরে চিতোরের সিংহাসনে বসল। রাজপুত প্রজারা এই বিষম ঘটনায় একেবার খাপ্পা হয়ে খুনের సి8