পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আড়ালে মিলিয়ে গেছে, সেই সময় তিনঘণ্টা ধন্তাধস্তির পরে বিদাকে মেরে তবে জয়মল বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে দেখলেন সঙ্গ চলে গেছেন, কিন্তু তার অকৰ্মণ্য ক্ষতবিক্ষত ঘোড়াটা উঠোনের মাঝে তেঁতুলতলায় দাড়িয়ে খানিক শুকনো ঘাস চিবুচ্ছে আরামে। জয়মল রাজভক্ত রাজপুতবীরের রক্তে রাঙা হাতখানি দিয়ে নিজের কপাল চাপড়ে হতাশ মনে প্রাণশূন্ত বিদার দিকে খানিক চেয়ে রইলেন— তারপর ঘাড় নিচু করে আস্তে-আস্তে বেরিয়ে গেলেন। এদিকে সকাল হয়ে গেল, কোন অজানা গায়ের কিষানরা সকালে খেতে যেতে-যেতে পথের ধারে দেখলে রক্তমাখা দুই রাজকুমার সুরজমল আর পৃথ্বীরাজ। সবাই মিলে ধরাধরি করে রাজপুত্রদের ডুলিতে তুলে গায়ে নিয়ে রাখলে। এদিকে মহারানারও লোকজন— তারাও বেরিয়েছে সন্ধানে ঘোড়া পালকি সব নিয়ে, রাজকুমারদের ফেরাতে, কিন্তু কেবল পৃথ্বীরাজ মুরজমল দুজনকে তারা সন্ধান করে ফিরে পেলে, আর দুজন যে কোথায় তার খবরই হল না ! পৃথ্বীরাজ রানীদের যত্নে আস্তে-আস্তে সেরে উঠলেন, সুরজমলেব চোট বেশি, অনেক তদবিরে তিনি সুস্থ হলেন। মহারানা চার কুমারের ব্যাপার শুনে একদিন পৃথ্বীরাজকে ডেকে বললেন, ‘এই যে ঘটনা ঘটেছে, এর জন্যে তুমিই দায়ী। সঙ্গ একেবারে নির্দোষ । সে কোথায় আছে, কি নেই, কিছুই জানা যাচ্ছে না ; বেঁচে থাকে তো তোমারই ভয়ে সে কোথায় লুকিয়ে আছে। মনে কোরো না তোমাকে আমি চিতোরে বেশ আরামে বসিয়ে রাখব, আর আমি চোখ বুজলেই আস্তে-আস্তে সিংহাসনে তুমি উঠে বসবে। আজই তুমি ঘোড়া অস্ত্র যা তোমার ইচ্ছে হয় নিয়ে বিদায় হও! লড়তেই চাও তো বড়ো-ভায়ের সঙ্গে না লড়ে পারো তো রাজ্যের শত্রুদের জুদ করোগে, তবে বুঝব তুমি বীর— যাও! ছেলের উপর এই হুকুম দিয়ে সুরজমলকে রানা ডেকে বললেন, ‘তুমি সঙ্গকে বাচাতে চেয়েছিলে সেই জন্যে তোমাকে শাস্তি দেব ९०९