পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৃথ্বীরাজ আর তারাবাইয়ের বীরত্বের কথা মহারানার কাছে পৌছল। এইবার বাপের প্রাণ গলল। জয়মল নেই, সঙ্গ কোথায় তা কেউ জানে না, একমাত্র রয়েছেন পৃথ্বীরাজ– ছেলের মতো ছেলে ; মহারানা পৃথ্বীরাজের সঙ্গে তারাবাইয়ের বিয়ে দিয়ে কমলমীর কেল্লায় দুজনকে থাকবার হুকুম দিলেন । মেবারের একেবারে শেষ সীমায় কমলমীর। এ সেই কেল্লা যেখানে লছমীরানী এতটুকু হাম্বিরকে নিয়ে বাস করতেন। কতদিন কেটে গেছে, কেল্লা শূন্য পড়েছিল ; আর আজ আবার কত পুরুষ পরে পৃথ্বীরাজ-তারাবাই-- বর আর বেী—হাসি বঁাশি গান দিয়ে সেই পুরোনো কেল্লার শূন্য ঘরগুলি পূর্ণ করে দেখা দিলেন। এই বাপেতে-ছেলেতে বরেতে বধূতে মিলন আর আনন্দের দিনে একসময় চিতোরে পৃথ্বীরাজ মহারানার সভায় বসে আছেন, সভা প্রায় ভঙ্গ হয়, মহারানা উঠি-উঠি করছেন— এমন সময় মালোয়া থেকে দূত এসে খবর পাঠালে, এখনি মহারানার সঙ্গে দেখা করতে চাই ! একসময় ছিল, যখন চিতোবের মহারানার সঙ্গে দেখা করতে হলে দিল্লীর বাদশার দূতকেও অন্তত পনেরো দিন মহারানার সুবিধার জন্য অপেক্ষা করতে হত, কিন্তু আজ মালোয়ার দূত এসেই বুক-ফুলিয়ে, কোনো হুকুমের অপেক্ষা না রেখে মহারানার দরবারে ঢুকল। শুধু তাই নয়, লোকটা একেবারে মহারানার গাঘেষে বসে যেন সমানে-সমানে কথাবার্তা শুরু করে দিলে। দূতের এই আস্পর্ধা দেখে পৃথ্বীরাজ একেবারে অবাক হয়ে গেলেন। খুব খানিক বাজে বকে দূত বিদায় হবার পর পৃথ্বীরাজ ঐ মালোয়ার দূতকে এত ভয় আর খাতির করবার কারণটা মহারানাকে শুধোলেন। বুড়ে রানা পৃথ্বীরাজের পিঠে হাত বুলিয়ে জবাব দিলেন, "বুঝলে না, আমি বুড়ো হয়েছি, তাই দন্তহীন সিংহের মতো গাধাও আমাকে লাথি মারতে চাচ্ছে । তোমরা নিজেদের মধ্যেই ভায়ে-ভয়ে লড়তে ব্যস্ত রয়েছ, তাই আমাকে সবদিক ঠাণ্ডা রেখে খুশি রেখে কোনো রকমে শান্তিতে নিজের আর প্রজাদের জমিজমা জরু-গরু সামলে চলতে হচ্ছে— আজ ক’বছর ধরে। পৃথ্বীরাজ বাপের কথার কোনো २०१