পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জবাব দিলেন না, কিন্তু বাপের কত যে দুঃখ, তা বুঝতে আজ র্তার দেরি হল না। তিনি লজ্জায় ঘাড় হেঁট করে সভা থেকে বেরিয়ে একেবারে নিজের দলবল নিয়ে সোজা মালোয় রাজার রাজ্যে গিয়ে হাক দিলেন যুদ্ধং দেহি! দুই দলে লড়াই বাধল। মাঠের মাঝে দুই দলের তাবু পড়েছে। যুদ্ধের আগের রাতে মালোয়ারাজ নিজের শিবিরে মখমলের গদিতে তাকিয়া ঠেস দিয়ে গ্যাট হয়ে বসে মহা ধুমধামে নাচ দেখছেন, এমন সময় ঝড়ের মতো পৃথ্বীরাজ এসে রাজাকে একবারে ধরাধরি করে তুলে নিয়ে নিজের কোটে এনে বন্ধ করলেন । মজলিস ভেঙে গেল— ঝাড়লণ্ঠনগুলোর সঙ্গে চুরমার হয়ে ! নাচনী, গাইয়ে হা-করে চেয়ে রইল— পৃথ্বীরাজের অদ্ভূত সাহস দেখে। রাজার সেনাপতি তাড়াতাড়ি সৈন্ত সাজাচ্ছেন এমন সময় পৃথ্বীরাজ মালোয়ারাজেরই লিখন সেনাপতিব কাছে দিয়ে পাঠালেন, ‘আমি চিতোর চললেম— বন্দী হয়ে । কিন্তু খবরদার আমাকে ছাড়াবার চেষ্টাও কোরো না । তাহলেই আমার প্রাণ যাবে, এখনি এসে তুমি আমার সঙ্গে দেখা করে, যুদ্ধ বন্ধ করে দাও । রাজা-রাজড়ার কথা— সেনাপতি সমস্ত সৈন্য ফিরিয়ে শুকনোমুখে এক পৃথ্বীরাজের শিবিরে হাজির হলেন । পুর্থীরাজ তাকে আশ্বাস দিয়ে বললেন, ‘রাজার প্রাণের জন্যে কোনো ভয় নেই ; আমি ওঁকে চিতোরে নিয়ে যাচ্ছি, খুব যত্নেষ্ট রাখব আর সুস্থ শরীরেই ফিরিয়ে দেব ; তোমাদের রাজার সেই হামবড় দূতটাকে ও ফিবে পাবে। মহারানা দূতকেও চান না, বন্দীকেও নয়, কেবল মালোয়ার কাছ থেকে যে নমস্কারট। তার প্রাপ্য তাই তিনি আমাকে আনতে হুকুম দিয়েছেন। তাই তোমাদের রাজার একবার সশরীরে চিতোর যাওয়া দরকার। কিন্তু এখান থেকে কিংবা পথের থেকে যদি রাজাকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে, তবে ওঁর ধড়টিই শুধু ফিরে পাবে, মাথাটি গিয়ে পড়ে থাকবে চিতোরের মহারানার সিংহাসনের নিচেই —পা রাখবার পিড়িখানির ঠিক সামনেই ? २०br