পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কাজটা ভালো হল না, মসুর । সবাই আমাদের দেখে ফেললে, এতক্ষণে কালাপানিতে টেলিগ্রাম গেছে যে আমরা ওই মুখেই চলেছি। সেখানে গেলেই পুলিশ লাগবে পিছনে, তখন সিন্ধবাদি হীরেটাই দখল করা শক্ত হবে। মসুর এসো, এইখানেই নেমে পড়া যাক । এইখান থেকে বেশ বদলে, রেলে করে উড়েদের সেই মন্দির পর্যন্ত যাওয়াই ভালো ।” বলে আমরা রূপনারায়ণ নদীর ধারে নেমে তল্পিতল্পা বেঁধে হেঁটে গিয়ে রেলে চড়লুম। আমি হলুম হীরানন্দ বাবাজি আর মসুর হল কিচ কিন্দা— আমার উড়ে চেলা । গাড়িতে দেখি কেবল মাড়োয়ারি, মাদ্রাজি আর বাঙালি । বাবাজি দেখে তারা আমাকে আদর করে বসালে,কত কথা পুছতে লাগল। জবাব দিতে পারিনে; কাজেই আমি সাজলুম বোবা আর মসুর হল কালা। আর কোনো গোল রইল না। ছ-মাস পুরীতে আছি, রোজ মন্দিরের চারদিকে ঘুরে বেড়াই, কিন্তু চুড়োর ওপর কোথায় যে সিন্ধবাদের সিন্দুকটা গিয়ে আটকে আছে তার সন্ধান পাইনে। শেষে একদিন একটা ফন্দি মাথায় এল । মসুরকে বললুম, “দেখ, মসুর, প্রায়ই দেখি এক-একটা লোক ওই মন্দিরের চুড়োয় নিশেন বাধতে ওঠে, তুই ওদের দলে ভিড়ে যদি একদিন মন্দিরের চুড়োয় গিয়ে বেশ করে সিন্দুকটা কোথায় আছে দেখতে পারিস তবে তোকে একখানা হীরে বকশিশ দেব ।’ মসুর প্রথমে কিছুতেই রাজি হয় না, বলে, ‘পড়ে মরব কত্তা ! কিন্তু শেষে দেখি একদিন গেছে ! বেশ করে চুড়োটা দেখে মসুর এসে বলছে, কত্তা ! সিন্দুক এখেনে নেই। ওই চুড়োব ওপর থেকে বিশ-ক্রোশ তফাতে আর-একটা মন্দির দেখা যায়, সেইখানে আমি পষ্ট দেখলুম সিন্দুকটা যেন পাথরের গায়ে ঝুলচে । কিন্তু অনেক দূরে কত্তা ! এইখান থেকে বালির ওপর দিয়ে ঠিক সোজা একেবারে পুব-মুখা যেতে হবে কত্তা ' মসুরের কথাই ঠিক । আজ ছ-মাস দেখছি এই কালাপানি দিয়ে কত জাহাজ এল, গেল ; কিন্তু একটি পেরেকও দেখলুম না যে ર (t ૦