পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নালক দেবলঋষি যোগে বসেছিলেন । নালক— সে একটি ছোটো ছেলে— ঋষির সেবা করছিল। অন্ধকার বর্ধনের বন, অন্ধকার বটগাছ-তলা, অন্ধকার এপার-গঙ্গা ওপাব-গঙ্গা । নিশুতিরাতে কালো আকাশে তারা ফুটেছে, বাতাস ঘুমিয়ে আছে, জলে ঢেউ উঠছে না, গাছে পাতা নড়ছে না। এমন সময় অন্ধকারে আলো ফুটল— ফুল যেমন করে ফোটে, চাদ যেমন করে ওঠে— একটু, একটু, আরো একটু। সমস্ত পৃথিবী তুলে উঠল— পদ্মপাতার জল যেমন তুলতে থাকে— এদিক-সেদিক, এধার-ওধার সে-ধার ! ঋষি চোখ মেলে চাইলেন, দেখলেন আকাশে এক আশ্চর্য আলো ! চাদের আলো নয়, সূর্যের আলো নয়, সমস্ত আলো মিশিয়ে এক আলোর আলো ! এমন আলো কেউ কখনো দেখে নি । আকাশজুড়ে কে যেন সাত-রঙের ধ্বজা উড়িয়ে দিয়েছে। কোন দেবতা পৃথিবীতে নেমে আসবেন তাই কে যেন শূন্যের উপরে আলোর একটি-একটি ধাপ গেথে গিয়েছে ! সন্ন্যাসী আসন ছেড়ে উঠে দাড়ালেন, নালককে বললেন— ‘কপিলবাস্তুতে বুদ্ধদেব জন্ম নেবেন, আমি ভার দর্শন করলে চললেম, তুমি সাবধানে থেকে ’ বনের মাঝ দিয়ে আঁকাবাকা সরু পথ, সন্ন্যাসী সেই পথে উত্তর-মুখে চলে গেলেন। নালক চুপটি করে বটতলায় ধ্যানে বসে দেখতে লাগল— একটির পর একটি ছবি । কপিলবাস্তুর রাজবাড়ি। রাজরানী মায়াদেবী সোনার পালঙ্কে খুমিয়ে আছেন। ঘরের সামনে খোলা ছাদ, তার ওধারে বাগান, শহর, মন্দির, মঠ। আরো ওধারে—অ ে দূরে হিমালয়পৰত— শাদা বরফে ঢাকা । আর সেই পাহাড়ের ওধারে আকাশ-জুড়ে २४१