পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু তখনো তিনি শুনছেন যেন তার বুকের ভিতরে পাজরায়পাজরায় ধাক্কা দিয়ে শব্দ উঠছে— ধ্বক, ধ্বক ! এবার পশ্চিমের চুয়ার দিয়ে-- অস্তাচলের পথ দিয়ে পশ্চিমমুখে মনোরথ চলেছে— সোনার রথ চলেছে– যেদিকে দিন শেষ হচ্ছে, যেদিকে সূর্যের আলো অস্ত যাচ্ছে। সেদিক থেকে সবাই মুখ ফিরিয়ে চলে আসছে নিজের-নিজের ঘরের দিকে। পাখিরা ফিরে আসছে কলরব করে নিজের বাসায়— গাছের ডালে, পাতার আড়ালে। গাই-বাছুর সব ফিরে আসছে মাঠের ধার দিয়ে নদীর পার দিয়ে নিজের গোঠে, গোধূলির সোনার ধুলো মেখে । রাখালছেলেরা ফিরে আসছে গায়ের পথে বেণু বাজিয়ে মাটির ঘরে মায়ের কোলে। সবাই ফিরে আসছে ভিন্‌ গায়ের হাট সেরে দূর পাটনে বিকিকিনির পরে। সবাই ঘরে আসছে— যার দূরে ছিল তারা, যারা কাছে ছিল তারাও। ঘরের মাথায় আকাশ পিদিম, যাদের ঘর নেই হ্রয়োর নেই তাদের আলো ধরেছে। তুলসীতলায় হুগ গো পিদিম— যারা কাজে ছিল, কর্মে ছিল, যারা পড়া পড়ছিল, খেলা খেলছিল, তাদের জন্তে আলো ধরেছে। সবাই আজ মায়ের দুই চোখের মতো অনিমেষ ছুটি আলোর দিকে চেয়েচেয়ে ফিরে আসছে মায়ের কোলে, ভাইবোনেদের পাশে, বন্ধুবান্ধবের মাঝখানে। ভিখারী যে সেও আজ মনের আনন্দে একতারায় আগমনী বাজিয়ে গেয়ে চলেছে "এল মা ওমা ঘরে এল মা ? মিলনের শাখ ঘরে-ঘরে বেজে উঠেছে । আগমনীর সুর, ফিরে আসার মুর, বুকে এসে ঝাপিয়ে পড়ার সুর, কোলে এসে গল-ধরার সুর, আকাশ দিয়ে ছুটে আসছে, বাতাস দিয়ে ছুটে আসছে, খোলা ছয়ারে উকি মারছে, খালি ঘরে সাড়া দিচ্ছে । শূন্ত-প্রাণ, খালি-বুক ভরে উঠছে আজ ফিরে-পাওয়া স্বরে, বুকেপাওয়া সুরে, হারানিধি খুজে-পাওয়া স্বরে ! সিদ্ধার্থ দেখছেন, সুখের আজ কোথাও অভাব নেই, আনন্দের মাঝে এমন-একটু ফাক নেই যেখান দিয়ে স্থঃখ আজ আসতে |రించి